স্পেনে অবৈধদের বৈধতা চান মানবাধিকারকর্মীরা
-
-
|

স্পেনে অবৈধদের বৈধতা চান মানবাধিকারকর্মীরা
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ মহামারিতে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্ত দেশ স্পেন। দেশটিতে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বসবাসকারী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ২ লাখ অবৈধদের বৈধ করে কাজের সুযোগ দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্পেনের ১৬১টি মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) এই ১৬১টি মানবাধিকার সংগঠন দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার দাবিতে পৃথক পৃথকভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। এসব মানববন্ধনে বর্তমানে প্রচলিত অভিবাসী আইনে (এস আর্টিকেল ১২৭ নম্বর ইমিগ্রেশন আইনে বর্তমান পরিস্থিতিতে কাগজ পাওয়ার যোগ্য) যারা নিয়ম মেনে স্থানীয় কাউন্সিলে রেজিস্টেশন করে বসবাস করছেন, তাদের বৈধ অভিবাসীর স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
একটি সূত্রে জানা যায়, স্পেনে কয়েক হাজার বাংলাদেশিসহ অবৈধ হয়ে পড়া মোট অভিবাসীর সংখ্যা ২ লাখ। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, বছরের পর বছর অবৈধ অভিবাসীরা ব্যবসাসহ বিভিন্ন রকমের পেশায় নিয়োজিত থেকে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। অথচ এসব অবৈধ অধিবাসীদের বৈধতা দিলে বৈধ কাজ করে নিয়মিত সরকারকে টেক্স-পে প্রদানের মাধ্যমে স্পেনের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। অভিবাসীরা সব সময়ই স্পেনের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।
বাংলাদেশি মানবাধিকার সংগঠন ভালিয়েন্তে বাংলা গতকাল রাজধানী মাদ্রিদে চলমান জরুরি অবস্থার মধ্যে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এছাড়া বাকি ৬০টি মানবাধিকার সংগঠন ও বিভিন্ন স্থানে এই কর্মসূচি পালন করছে বলে জানান ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোহম্মদ ফজলে এলাহী।
মানবন্ধনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জুলহাস উদ্দীন, আল আমীম পালওয়ান, মকবুল হোসেন, মানিআহমদ, শাহ আলম প্রমুখ।
এ সময় করোনা মহামারির মধ্যে স্পেনের অর্থনীতি আর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানান মোহম্মদ ফজলে এলাহী।
স্পেন পৃথিবীর বড় অর্থনৈতিক দেশগুলোর মধ্যে একটি। মূলত করোনা মহামারি সংকট শুরু হওয়ার একমাস আগে থেকেই দেশটির অর্থনৈতিক অন্যতম দুটি খাত কৃষি ও পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। আর বর্তমানে দেশটি প্রায় পর্যটন শূন্য। এর মধ্যে কৃষি খাতে চলছে চরম লোক সংকট। নতুন ফসল তোলা এবং নতুন করে ফসল বোনার মানুষ নেই। শুধু কাস্তিইয়া আ লা মানছাসহ ভ্যালেন্সিয়াতে কৃষিকাজের জন্য প্রচুর লোকের সংকট শুরু হয়েছে। প্রায় তিন লাখ বেকার মানুষ ও বিদেশিদের তারা খুঁজছে কৃষি খাতকে পুনর্জীবিত করতে।
করোনা মহামারিতে স্পেনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে বাণিজ্য ও পর্যটন খাত। পর্যটন খাতের ধসের কারণে দেশটিতে বাংলাদেশি যারা পর্যটন নির্ভর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারা চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছে। পরিস্থিতি ভালো হলেও কতদিনে আবার স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে সেটা নিয়ে একটা চরম অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে।