সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার দশমী ছিল আজ রোববার (১৩ অক্টোবর)। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মহাষষ্ঠী থেকে শুরু করে সিঁদুর খেলায় দুর্গার বিদায় জানাচ্ছেন ভক্তরা। পুণ্যার্থীদের পূজা-অর্চনায় মুখর ছিল মণ্ডপ। ছবিগুলো বিকেলে তুলেছেন বার্তা২৪.কমের ফটোগ্রাফার নূর-এ-আলম। বার্তা২৪.কমের পাঠকদের জন্য ছবিগুলো তুলে ধরা হলো-
এক বয়স্ক দম্পতির নাচ ঝড় তুলেছে ইনস্টাগ্রামে। এই দম্পতি ভারতের একটি রাজ্যের এক উৎসবে স্থানীয় রীতির পোশাক পরে তালে তালে পা মিলিয়ে এমনভাবে নেচেছেন যে, তা দেখে কোটি মানুষ বিস্মিত হয়েছেন!
এমন নিখুঁত এবং তালে তালে পা মেলানো একমাত্র যারাই নিয়মিত অনুশীলন করেন, একমাত্র তাদের পক্ষেই সম্ভব এত নিখুঁত ও এত সুন্দর করে নাচতে পারা।
ইতোমধ্যে, লাখ লাখ মানুষ তাদের সেই মনকাড়া ভিডিও দেখেছেন এবং এখনো অনেকেই সে ভিডিও দেখেই চলেছেন।
ভিডিওর লিংক -দম্পতির নাচ ঝড় তুলেছে ইনস্টাগ্রামে
শনিবার (১২ অক্টোবর) ভারতের টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে।
খবরে বলা হয়, সম্প্রতি, গুজরাটের এক বয়স্ক দম্পতি রাজ্যের একটি উৎসব নভরাত্রির অনুষ্ঠানে এমন দুর্দান্ত তালে তালে পা মিলিয়ে এবং নিখুঁতভাবে নেচেছেন যে, যারাই তাদের সেই নাচ দেখেছেন, তারাই মন্তব্য করেছেন- বয়স একটি সংখ্যামাত্র!
ওই দম্পতির নাম জানা না গেলেও বলা হয়, তাদের সেই দানদিয়া নৃত্য পরিবেশনা ছিল অতুলনীয়! সে কারণে ভিডিওটি এত ভাইরাল হয়ে যায়।
ইনস্ট্রাগ্রামের প্রভাবশালী সেলিব্রেটি তানিশ শাহ এই ভিডিটিও পোস্ট করেন। এরপর এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৩৪ লাখ দর্শক ভিডিও ডান্সটি দেখেছেন। শুধু তাই-ই নয় প্রতিনিয়ত এর দর্শক সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে।
শারদীয় দুর্গা উৎসবে মেতেছে দেশ। তিথি অনুযায়ী আশ্বিন মাসের দেবীপক্ষ অর্থাৎ, শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী সনাতন ধর্মীরা দুর্গাপূজা উদযাপন করে। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এটিই সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। নানা আয়োজনে সারাদেশে পূজা উদযাপন করা হয়।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) পুজোর ৩য় দিন। দেখতে দেখতে মহাষ্টমী তিথি শেষ হয়ে সন্ধিক্ষণে সন্ধিপূজার মাধ্যমে নবমী তিথির সূচনা হয়েছে। নবমী বলতেই মনে আসে ধুনুচি নাচের কথা। সাধারণত মহানবমী তিথিতে পূজার পরে এই ধুনুচি নাচ নাচা হয়। দেবী দুর্গাকে ধুনুচি নাচ উৎসর্গ করা হয়। অনেক স্থানে দশমীতে প্রতিমা ভাসানের আগেও ধুনুচি নাচ করা হয়।
ঢাকের তালে দেবীর সামনে ধুনুচি হাতে নিয়ে সুশৃঙ্খলে করা হয় এই ধুনুচি নাচ। ধুনুচিতে নারকেলের খোসা জ্বালিয়ে তাতে ধুপ ছিটিয়ে তৈরি করা হয় ধোঁয়া। এক বা একাধিক ধুনুচি হাতে নিয়ে ঢাকের আওয়াজের আন্দোলনে নাচে মেতে ওঠে লাল-সাদা সাজে বাঙালি নারী-পুরুষ।
দুর্গাপূজা মানেই শিউলি ও কাশফুল, শরতের আকাশ, ঢাকের বাদ্য। তার সাথে উলুধ্বনি, ঘণ্টা ও শাঁখের আওয়াজ, আনন্দ উদযাপন এবং তার সাথে ধুনুচি নাচ। বাঙালির দুর্গাপূজার অতি প্রাচীন ঐতিহ্যসম্পন্ন ধুনুচি নাচ ছাড়া যেন পূজাই অসম্পন্ন। চণ্ডীপাঠ, দেবীর ব্র্রতকথা, অঞ্জলি প্রদান, আরতি, পূজা-অর্চনার মাধ্যমে দুর্গাপূজা করা হয়। তবে এসব তো পুজোর নিয়মের অংশ। পুজো মানেই আনন্দ উৎসব। তাই আনন্দ প্রকাশ করে দেবীর উদ্দেশ্যে সঙ্গীত আরাধনা, সিঁদুর খেলার পাশাপাশি ধুনুচি নাচ করারও প্রচলন রয়েছে।
এই ধুনুচি নাচের উল্লেখ পুরাণেও রয়েছে। ধারণা করা দেবী দুর্গা নিজেই ধুনুচি নাচ নেচেছিলেন। মহিষাসুরকে বধ করার আগে নিজের মধ্যে সর্বোচ্চ শক্তি সঞ্চার করার জন্য দেবী ধুনুচি নাচ করেন। দেবীর প্রতি সমগ্র একাগ্রতা নিবেদন করতে আজও ভক্তরা ধুনুচি নাচ করেন। বিভিন্ন জায়গায় একক বা দলীয়ভাবে ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।
সময়ের সাথে ধুনুচি নাচের প্রচলন কমে আসছে। তবে এখনো দুর্গাপুজো এলেই ছোট-বড় সকলে মিলে ধুনুচি নাচ নাচা হয়। কালের গর্ভে এই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্য অবশ্যই ধুনুচি নাচের চর্চা বাড়ানো উচিত। এতে পুজোর আনন্দ দ্বিগুণ হয়। ধুনুচি নাচ ছাড়া দুর্গাপূজা যেন অসম্পূর্ণ।
আশ্বিনের মাসের দেবীপক্ষে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। শারদীয় দুর্গাপূজার ৩য় দিন আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর)। দুর্গোৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন মহাঅষ্টমী।
বসন্তে দেবী পূজার প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গেছিলেন মহাপুরুষ শ্রীরাম। রাবণকে বধ করার উদ্দেশ্যে শরতে দেবীর অকালবোধন করেন তিনি। সেই থেকে শরতেই দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়।
আশ্বিনের শুক্লাষ্টমীকে বিশেষ মাহেন্দ্রক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এইদিনে ১০৮টি পদ্মফুল উৎসর্গ করা হয় দেবীর পায়ে। জ্বালানো হয় ১০৮টি ঘিয়ের প্রদীপ। অষ্টমী আর নবমী তিথির শুভ সন্ধিক্ষণ অবধি দেবীর পুজো চলতে থাকে। এই ক্ষণকে বলে সন্ধিক্ষণ। কেননা, অষ্টমী তিথির অন্তিম এবং নবমী তিথির প্রারম্ভের সম্মলনের সন্ধিঘটে এই বিশেষ ক্ষণের। তাই এই সন্ধিক্ষণে বিশেষ সন্ধিপূজা হয়। চণ্ডীপাঠ, শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাদ্যি, উলুধ্বনি, ঘণ্টা- সব মিলিয়ে চারদিক মুখোরিত হয় দুর্গা আরাধনায়।
সনাতন ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী আজকের দিনেই দেবীদুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। অষ্টমী তিথিকে সকল দেবতাগণ অসুর বধে সাহায্য স্বরূপ দেবীকে নানাবিধ অস্ত্র উপহার দেন। দেবীর দশ হাত দেবতাদের বিশেষ শক্তিসম্পন্ন অস্ত্রে পরিপূর্ণ হয় ওঠে। অসুর বিনাশী দেবী দুর্গার মাহাত্ম্যকে স্মরণ করে আজ মহোৎসব পালন করে ভক্তরা।
এছাড়াও আরও কিছু কারণে অষ্টমী পুজোর দিন অন্যান্য দিনের চেয়ে বিশেষত্ব পায়। আজকে দিনে কুমারীপূজা করা হয়। অনূর্ধ্ব ১৬ বছর বয়সী কোনো বালিকা বা কিশোরীকে দেবী জ্ঞানে পূজা করার এই রীতিই মূলত কুমারী পূজা। প্রতিটি নারীই দেবীর অংশ, তাদের দেবীজ্ঞানে শ্রদ্ধাভক্তি প্রদান করা উচিত- সেই বার্তা প্রচার করা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয় কুমারী পুজার মাধ্যমে।
জীবনের "অর্থ "
জীবনের মানে ভিন্ন জনে ভিন্ন মত রয়েছে। কারো কাছে জীবন মানে যন্ত্রণা, কারো কাছে একটি সুখী সুন্দর পরিবার নির্মাণ, কারো কাছে জীবন মানে সম্পদশালী বা প্রাচুর্যবান হওয়া, কারো কাছে জীবন মানে একটা শিল্প, কারো কাছে জীবন মানে শুধুই ভালোবাসা, কারো কাছে জীবন মানে হাসি আনন্দের মাধ্যমে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করা।
" জীবন জিজ্ঞাসা?
আপনার জন্ম হয়েছিল বস্ত্রহীনতার মধ্য দিয়ে এবং মৃত্য হবে বস্ত্রহীনতার মধ্য দিয়ে, সঙ্গী হবে শুধুমাত্র দুটুকরা সাদা কাপড়।
আপনি পৃথিবীতে এসেছিলেন অত্যন্ত দুর্বল হয়ে এত দুর্বল ছিলেন যে, মায়ের সাহায্য ছাড়া খাবার টুকু মুখে নিতে পারতেন না। আপনি যখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন তখনও অত্যন্ত দুর্বল ও অসহায় থাকবেন তখন আপনার কাফনের কাপড়টুকু আপনি নিজে পরতে পারবেন না আর একজন আপনাকে পরিয়ে দিবে।
আপনি যখন পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন আপনার অর্থ সম্পদ কিছুই ছিল না। যখন আপনি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন তখনও আপনার অর্থ সম্পদ কিছুই থাকবে না।
আপনাকে প্রথম গোসল যেমন অন্য কেউ করে দিয়েছিল তেমনি আপনার শেষ গোসলও অন্য কেউ করে দিবে।
আপনি যখন পৃথিবীতে একা এসেছিলেন ঠিক তেমনিভাবে আপনাকে পৃথিবী থেকে একাই চলে যেতে হবে। আপনার সাথে আপনার প্রিয়জন কেউ যাবে না।
জীবন নামের রেলগাড়িটা পায় না খুঁজে স্টেশন। চলন্ত ট্রেনের মতই গতিময় জীবন চলছে আপন মহিমায়। এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে। স্টেশনে যাত্রীরা যে যার মত করে ছুটে চলছে গন্তব্যে । মানুষের জীবনেও এক একটি স্টেশন থাকে। যেখানে রেখে যায় কিছু স্মৃতি যা পরবর্তীতে যুগ যুগ তাকে বাচিয়ে রাখে।
জীবনের এই ভ্রমণের দৈর্ঘ্য কেউ জানে না। এটি কখন থামবে তাও কেউ জানে না। আমাদের একসাথে ভ্রমণ খুব ছোট।
এটাই জীবন! তাহলে কেন এত হানাহানি, কেন এত মারামারি, কেন এত হিংসা, কেন এত বিদ্বেষ, কেন এত সংঘাত, কেন এত বেঈমানী।
তাই সকলের প্রতি দয়াশীল হন। সকলকে আপন করে নিন ক্ষণিকের এই যাত্রায়। জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। সুতরাং জীবনকে মহৎ কাজে উৎসর্গ করুন। সর্বদাই নিজের ও মানুষের কল্যান করুন। অনর্থক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। তাহলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও পরকালে আপনার কল্যাণ করবেন।
আমরা কেউই চিরস্থায়ী নই।
এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহন করলে প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। অল্প একটু সময়ের ব্যবধান। রাজা, বাদশা, ধনী, গরিব, যেই হউক তাকে এই পৃথিবীর মায়া মমতা ছেড়ে যেতেই হবেই ।
কোন তুচ্ছ ঘটনাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করার দরকার নেই, কারণ আমাদের একসাথে যাত্রা খুবই ছোট এবং স্বল্প সময়ের।
আমাদের প্রত্যেককে বুঝতে হবে যে, এই পৃথিবীতে আমাদের সময় এতটাই স্বল্প যে, রেষারেষি, অনর্থক যুক্তি, তর্ক, হিংসা, অন্যকে ক্ষমা না করা, অসন্তুষ্টি এবং অন্যকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা মনোভাবটা স্বল্প সময়ের যাত্রায় শুধুই সময়ের অপচয় মাত্র।
কেউ আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, ভয় দেখিয়েছে, ঠকিয়েছে, বিনা কারনে আপনাকে অপমান করেছে। শান্ত থাকুন, উপেক্ষা করুন, ক্ষমা করে দিন, এড়িয়ে যান,প্রকৃতিই তার বিচার করবে । কারণ যাত্রাটি খুব ছোট এবং স্বল্প সময়ের।
কেউ আপনার কাছে যে সমস্যাই নিয়ে আসুক না কেন, সফল সমাধানের চেষ্টা করি। মনে রাখবেন যে একসাথে আমাদের যাত্রা খুব ছোট এবং কম সময়ের।
আসুন কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে সহযাত্রী ভেবে একে অন্যকে সহযোগিতা করি, কারণ যাত্রাটি খুবই ছোট্ট কিন্তু কাজ অনেক। এই অল্প সময়ে অনর্থক সময় নষ্ট না করে সততার সাথে নিজেকে সফল করতে চেষ্টা করি এবং সবাইকে অবিরাম
ভালোবাসি। মানুষের সাথে আপনি যত সহজ ভাষায় কথা বলবেন মানুষ আপনাকে ততবেশী ভালোবাসবে।
যে ব্যক্তি সৎকাজ করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, এবং সে মুমিন, আমি অবশ্যই তাদের উত্তম জীবন দান করব এবং অবশ্যই তাদের উত্তম কর্মের প্রতিদান দেব।
আসুন এই ক্ষণিকের যাত্রায় জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মহৎ কাজে উৎসর্গ করি। অনর্থক কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখি।
ধন্যবাদ; আজ এ পর্যন্ত অন্য কোন পর্বে আবার দেখা হবে।
লেখক: মোঃ আব্দুল কুদ্দুস, জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক পিএলসি।