কলকাতার পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট চরিত্র ‘অপু’কে নিয়ে ‘অভিযাত্রিক’ নামের একটি সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। সেই সিনেমার কালজয়ী অপু চরিত্রের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ।
সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু সিনেমার শুটিং শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বাংলাদেশি চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে কেন্দ্র করে ভিসা জটিলতায় পড়েন আরিফিন শুভ। আর সেই জটিলতায় শেষ পর্যন্ত শুভর ‘অপু’ হওয়া হাতছাড়া হয়ে যায়। তারপর থেকে সিনেমাটির জন্য নতুন ‘অপু’কে খুঁজতে শুরু করেন পরিচালক। আজ ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সিনেমাটিতে শুভর জায়গায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন কলকাতার অর্জুন চক্রবর্তী।
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে শুভ্রজিৎ মিত্র বলেন, ‘আমাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন আরিফিন শুভ। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হয়নি। শুভর পরিবর্তে ছবিতে অর্জুন চক্রবর্তী অভিনয় করবেন। অর্জুন মেধাবী একজন অভিনেতা। শেষ কয়েক বছর ধরে তিনি তার প্রমাণ দিচ্ছেন। আমি মনে করি, তিনি এই কালজয়ী চরিত্রটি ভালোভাবে ফুঁটিয়ে তুলতে পারবেন।’ সত্যজিৎ রায় ১৯৫৯ সালে অপু ট্রিলজি শেষ করেছিলেন ‘অপুর সংসার’ সিনেমার মাধ্যমে। ঠিক সেখান থেকেই শুরু হবে ‘অভিযাত্রিক’। আর এই সিনেমার মাধ্যমে ষাট বছর পর বাঙালি দর্শকের সামনে আসছে অপু।
সিনেমাটিতে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়কে দেখা যাবে লীলার চরিত্রে, রাণুদির ভূমিকায় থাকছেন শ্রীলেখা মিত্র। তার দিদির চরিত্রে অভিনয় করবেন সোহাগ সেন, অপর্ণা চরিত্রে রয়েছেন দিতিপ্রিয়া রায়।
লিভ টুগেদারকে উৎসাহী করায় ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সংগীতশিল্পী জিনাত সানু স্বাগতাকে ক্ষমা চাইতে হবে জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেয়া হয়েছে। মুহম্মদ আরিফুল খবির নামে এক ব্যক্তির পক্ষে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) এ নোটিস পাঠানো হয় অভিনেত্রীকে। এতে জানানো হয়, প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনি (স্বাগতা) হাসান আজাদ নামক একজন ব্যক্তির সঙ্গে লিভ টুগেদার করিয়াছেন বলিয়া স্বীকার করেন এবং যাহা বিগত ১ (এক) বছর যাবৎ করিয়াছেন তাহাও প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। পাশাপাশি লীভ টুগেদার করিবার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। আপনি একজন মুসলমান ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আপনার জানা আছে বিবাহের পূর্বে নারী ও পুরুষের মধ্য সহবাস বা লীভ টুগেদার করা সম্পূর্নরুপে হারাম। আপনি উক্ত হারাম বিষয়টি নিজে করিয়া অপরকে করিবার জন্য উৎসাহ প্রদান করিতেছেন।
যাহার কারনে সমাজে ব্যভিচারের মাত্রা বৃদ্ধি পাইয়া সমাজে এক বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হইবে। আপনার উক্তরুপ বিবৃতির কারণে মুসলমান ধর্মাবলম্বীগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত প্রদান করিয়াছে। যেহেতু আমার মোয়াক্কেল একজন ধর্মপ্রান মুসলান হওয়ার কারনে আমার মোয়াক্কেলের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত লাগিয়াছে। যাহার কারণে সংক্ষুদ্ধ হইয়া আপনার প্রতি অত্র নোটিস প্রেরন করিয়াছে।
অতএব, অত্র নোটিস প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে আপনার উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করিয়া প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন। তাহা আমার মোয়াক্কেলকে অবহিত করিবেন। অন্যথায় আমার মোয়াক্কেল আপনার ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতদানকারী উক্ত বিবৃতির জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করিবেন। যাহার দায়ভার আপনার উপর বর্তাইবে।’
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘আমি আর হাসান এক বছর লিভ টুগেদার করেছি। তারপর দুজন দুজনকে পার্টনার হিসেবে পছন্দ করেছি। আমরা যখন লিভ টুগেদার করেছি, আমাদের দুজনের বাবা-মায়ের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। এমনকি আমার ভাই-বোনও বলেছে, কেউ যুক্তরাজ্যে থেকে আসলো, তুমি বিয়ে করে ফেললা, এরপর জীবনটা শেষ হয়ে গেল। তার চেয়ে ভালো একসঙ্গে থেকে দেখো, সারাজীবন থাকতে পারবে নাকি। তারপর সিদ্ধান্ত নাও।’
অভিনেত্রী আরও বলেছিলেন, ‘সমাজও আমাদের বিষয়টা মেনে নিয়েছে। প্রথমে একটু সময় নিয়েছে কিন্তু পরে বিষয়টা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমি মনে করি, আমাদের সমাজও পরিবর্তন হচ্ছে। ডিভোর্স নরমালাইজ হচ্ছে, লিভ টুগেদারও নরমালাইজ হবে।’
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারিতে বিয়ে করেন জিনাত সানু স্বাগতা। প্রেমিক ও বন্ধু হাসান আজাদের সঙ্গেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তিনি। তার স্বামী একজন লন্ডন প্রবাসী। তার জন্ম ও পড়াশোনা সবই যুক্তরাজ্যে। সংগীত জগতের সঙ্গে জড়িত তিনি।
ঘরবন্দি মানুষ যখন করোনা মহামারির আতঙ্ক আর বের হতে না পারার হতাশায় ডুবে ছিল, তখন যেন বিনোদন মাধ্যম হিসেবে অনলাইন প্লাটফর্মের স্বর্ণযুগ শুরু হয়। ২০২১ সালে শীর্ষস্থানীয় অনলাইন প্লাটফর্ম নেটফ্লিক্স প্রকাশ করে সিরিজ স্কু্ইড গেম। করোনার প্রভাবকালীন সময়ে প্রকাশিত দক্ষিণ কোরিয়ান এই সিরিজ রাতারাতি বনে যায় বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। ছোটবেলায় মজার সব স্মৃতি বিজড়িত খেলাগুলো যখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয় তখন পর্দার খেলোয়াড় আর স্ক্রিনের সামনে বসা দর্শক, সবার মধ্যেই বিরাজ করে টান টান উত্তেজনা। সিরিজটি শেষ হয়েছিল রোমাঞ্চকর একটি পরিস্থিতিতে। এমনকি শেষে দ্বিতীয় কিস্তির আঁচও দেওয়া হয়েছিল। এজন্য স্কুইড গেম সিজন টু এর জন্য ভক্তরা অধীর আগ্রহে বসে ছিল।
৩ বছর পর এবছর ক্রিসমাস উপলক্ষে ২৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে স্কুইড গেম সিজন টু। তবে এই সিজন নিয়ে অধিকাংশ ভক্তই হতাশ। আইএমডিবিতে প্রথম সিজন যেখানে দর্শকদের ৮৪ শতাংশ এবং সমালোচকদের ৯৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেখানে সিজন টু দর্শকদের ৫৯ শতাংশ এবং সমালোচকদের থেকে ৮৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে। স্পষ্টভাবেই বহুল প্রত্যাশিত হওয়ার পরও প্রথম সিজনের মতো দ্বিতীয় সিজন ভক্তদের মনে দাগ কাটতে পারেনি।
প্রথম সিজন যেখানে শেষ হয়েছিল এবারের গল্প সেখানে থেকেই শুরু হয়। সিরিজের প্রধান চরিত্র সেওং গি-হুন স্কুইড গেম জেতার পর তার জীবনের গল্প এগিয়ে চলে। প্রিয় বন্ধুসহ এত মানুষের মৃত্যুর সাক্ষি হওয়ায়, গেমে জেতা ৫৪.৬ বিলিয়ন দক্ষিণ কোরিয়ান ইয়ন( কোরিয়ান মুদ্রা)ও তার মনে শান্তি এনে দিতে পারেনা। তাই নিজের মেয়ের কাছে আমেরিকায় যাওয়ার প্রস্তুতিতে নেয় সে। তবে বিমানবন্দরেই এমন কিছু ঘটে যে কারণে সিদ্ধান্ত বদল করে স্কুইড গেমের ফ্রন্টম্যানকে ধরতে ফিরে যায় সে। ঘটনাক্রমে সে আবার স্কুইড গেমে ফিরে আসে নতুন এক উদ্দেশ্য নিয়ে। নতুন অংশগ্রহণকারীদের সাথে আরেকবার জীবন অথবা মৃত্যুর খেলা শুরু হয়।
সিজন টু নিয়ে ভক্তদের অভিযোগ, এই সিজন ছিল বোরিং। আগের সিজনের তুলনায় গেমের সংখ্যা ছিল কম। ক্যারেক্টারদের ব্যক্তিগত গল্প দেখাতেই অনেক বেশি সময় নিয়েছেন পরিচালক। তাছাড়া এবারের টুইস্টগুলোও আগের মতো থ্রিলিং ছিল না। গল্প যত এগোচ্ছিল, অনেকটাই আন্দাজ করা যাচ্ছিল এরপর কি হতে পারে। এমনকি গল্পের শেষটাও যেহেতু সম্পন্ন নয়, তাই ভক্তদের মনে রোমাঞ্চ তৈরি করতে পারেনি।
সিজন টু’তে পর্ব রয়েছে ৭ টি, যেখানে প্রথম সিজনে ছিল ৯ টি পর্ব। এবারের সিজনের গল্প সিরিজে একটা ক্লিফ হ্যাংগার রেখেই শেষ করা হয়েছে। ভক্তদের ধারণা সিরিজের গল্প সম্পন্ন হবে সিজন থ্রিতে। গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, সিজন থ্রি আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালেই প্রকাশ করা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ডাইস্টোপিয়ার সারভাইভাল থ্রিলার হরর এই সিরিজটির দ্বিতীয় সিজন লিখেছেন হোয়াং ডং-হ্যুক। তিনি একজন বিখ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ান লেখক এবং টেলিভিশন প্রযোজক। এই সিজনে অভিনয় করেছেন লি জং-জায়ে, ওয়াই হা-জুন, লি ব্যুং-হুন, ইম সি-ওয়ান, কাং হা-নেউল, লি জিন-উক, পার্ক সুং-হুন, ইয়াং ডং-গেউন, জো ইউ-রি, কাং এ-শিম এবং লি সিও-হোয়ান।
সিজন-১ অনেক বেশি হাইপ তৈরি করেছিল বিধায় এই সিজন নিয়েও প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম সিজনের সঙ্গে দ্বিতীয় সিজনের তুলনাও হওয়ার ছিল। যেখানে স্পষ্টভাবেই বিজয়ী প্রথম সিজন। হয়তো সিজন থ্রি প্রকাশ পেলে গল্প পরিপূর্ণতা পাওয়ার পর দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতেও পারে।
চলতি বছর দেশি ওটিটিতে দেখা গেছে থ্রিলার, রোমান্টিক, হরর থেকে ড্রামাধর্মী কনটেন্ট। বছরের শেষ ভাগে আবার সাহিত্যনির্ভর বেশ কয়েকটি সিরিজ ও সিনেমা তৈরি হয়েছে।
আলোচিত ৫ দেশি ওয়েব ফিল্ম
‘অসময়’
‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’
লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’
‘ফরগেট মি নট’
‘মায়া’
ছোটপর্দার নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি চলতি বছর তার ওয়েব ফিল্ম ‘অসময়’ দিয়ে আলোচিত হয়েছেন। মূলত সামাজিক বার্তা, অভিনয় আর নির্মাণের গুণে দর্শক পছন্দ করেছেন সিনেমাটি। দুর্দান্ত অভিনয় করেন রুনা খান, ইরেশ যাকের ও শরাফ আহমেদ জীবন।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমা ‘লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী’ মুক্তি পেয়েছিল রোজার ঈদের আগে। ফারুকীর নির্মাণগুণে সিনেমাটিও ছিল আলোচনায়। এতে গুণী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর বিপরীতে অভিনয়ে অভিষেক হয়ে নজর কাড়েন সংগীতশিল্পী জেফার রহমান।
শিহাব শাহীনের রোমান্টিক ওয়েব ফিল্ম ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ও প্রশংসিত হয়েছে। তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে গায়ক-অভিনেতা প্রীতম হাসানও ছিলেন সাবলীল।
অন্যদিকে ‘ফরগেট মি নট’ যেন ছিল তাজা হাওয়ার মতোই। রবিউল আলম রবির এই ফিল্মে মেহজাবীন চৌধুরী ও ইয়াশ রোহানের রসায়ন মুগ্ধ করে দর্শকদের।
জনপ্রিয় নির্মাতা রায়হান রাফীর ‘মায়া’ ওয়েবফিল্মে মাদকের ভয়াবহতা দেখানো হয়েছে। সঙ্গে ছিলো দারুণ এক পারিবারিক গল্প। ছবিতে অনদব্য অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ইমন ও জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী সারিকা সাবরিন।
চলতি বছরের ব্যতিক্রমী দুই কাজ ‘কালপুরুষ’ আর ‘ফরগেট মি নট’। প্রথমটি সায়েন্স ফিকশন, সময় পরিভ্রমণের মিশেলে তৈরি হয়েছে। সালজার রহমানের প্রথম কাজটি নিয়েও কথা হয়েছে।
আলোচিত ৫ দেশি ওয়েব সিরিজ
‘আরারাত’
‘গোলাম মামুন’
‘চক্র’
‘রঙিলা কিতাব’
‘২ষ’
ভিকি জাহেদের দুটি সিরিজ ‘আরারাত’ ও ‘চক্র’ নিয়েও কথা হয়েছে অন্তর্জালে। ‘আরারাত’-এ অভিনয় করেন মেহজাবীন চৌধুরী, বিজরী বরকতউল্লাহ, আজিজুল হাকিম ও শ্যামল মাওলা। ‘চক্র’তে ছিলেন তৌসিফ মাহবুব ও তাসনিয়া ফারিণ।
থ্রিলার সিরিজের মধ্যে শিহাব শাহীনের ‘গোলাম মামুন’ দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। সীমিত বাজেটের মধ্যেও এ সিরিজে বুদ্ধিদীপ্তভাবে গল্প বলতে পেরেছেন নির্মাতা। অপূর্বও দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন, সাবিলা নূরকেও পাওয়া গেছে নতুনভাবে।
একই কথা প্রযোজ্য ‘রঙিলা কিতাব’-এর ক্ষেত্রেও। মোস্তাফিজুর নূর ইমরান ও পরীমনিকে নিয়ে উপভোগ্য সিরিজ বানিয়েছেন অনম বিশ্বাস।
ধীরলয়ের ড্রামাধর্মী সিনেমাটির জন্য প্রশংসিত হয়েছেন নির্মাতা রবিউল আলম রবি। বছরের শেষ ভাগে মুক্তি পাওয়া নুহাশ হুমায়ূনের ‘২ষ’-এর দুটি পর্ব মুক্তি পেয়েছে, দুটিই প্রশংসিত হয়েছে।
অভিনেতাদের মধ্যে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, এফ এস নাঈম, মোস্তাফিজুর নূর ইমরান দারুণ কাজ করেছেন।
অভিনেত্রীদের মধ্যে মেহজাবীন চৌধুরীর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে। ভিন্নধর্মী সিরিজ, সিনেমায় নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। তাসনিয়া ফারিণেরও ওটিটিতে দারুণ বছর কেটেছে। আর মাতৃত্বকালীন বিরতি কাটিয়ে ফেরাটা স্মরণীয় করে রেখেছেন পরীমনি।
বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ অভিনেত্রী অলিভিয়া হাসি আর নেই! গত শুক্রবার ৭৩ বছর বয়সী এ অভিনেত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
১৯৬৮ সালে ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ সিনেমায় অভিনয় করে পরিচিতি পান অলিভিয়া। সিনেমায় শুটিংয়ে তার বয়স ছিল মাত্র ১৫। ‘জুলিয়েট’ চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি থেকে পুরস্কার—সবই অর্জন করেছিলেন এ অভিনেত্রী। সে বছর সেরা নবাগত অভিনেত্রী হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি।
১৯৫১ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে অলিভিয়া হাসির জন্ম। সাত বছর বয়সে লন্ডন যাওয়ার আগে নাটকের স্কুল ইতালিয়া কোন্তি একাডেমিতে পড়াশোনা শুরু করেন।
উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাটক অবলম্বনে নির্মিত ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ নির্মাণের পরিকল্পনার পর থেকেই প্রধান দুই চরিত্রে তরুণ কাউকে খুঁজছিলেন পরিচালক ফ্রাঙ্কো জেফিরেলি। একদিন তিনি মিস জোয়ান ব্রডির ‘প্রাইম’ নাটকের প্রদর্শনীতে যান। যেখানে ভেনেসা রেডগ্রেভের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন অলিভিয়া হাসি। মঞ্চে অভিনেত্রীর পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হন জেফিরেলি। ১৫ বছর বয়সী অলিভিয়া হাসিকে এরপরই এ চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেন।
সিনেমায় ‘রোমিও’ চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রিটিশ অভিনেতা লিওনার্ড হোয়াইটিং। তখন অভিনেতার বয়স ছিল ১৬ বছর। ১৯৬৮ সালের অস্কারে ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ সেরা সিনেমা, সেরা পরিচালকসহ চারটি ক্যাটাগরিতে অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল। সেবার সেরা সিনেমাটোগ্রাফি ও সেরা কস্টিউম বিভাগে অস্কার জয় করে সিনেমাটি।
সিনেমাটি অলিভিয়া হাসির ক্যারিয়ারে ভূমিকা রাখলেও এ নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। অলিভিয়া হাসি ও লিওনার্ড হোয়াইটিং প্যারামাউন্ট পিকচার্সের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলেন। তাদের দাবি, ১৯৬৮ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি সিনেমা শুটিংয়ের সময় কার্যত চাপ দিয়ে তাদের নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করানো হয়েছে। সে কারণেই ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হন তারা।
অভিনেতা লিওনার্ড হোয়াইটিং তখন দাবি করেছিলেন, ইতালিয়ান পরিচালক ফ্রাঙ্কো জেফিরেলি জোর করে ওই দৃশ্যে অভিনয় করিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু গত বছর একজন বিচারক মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিলেন, দৃশ্যটি ‘যথেষ্ট যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ’ ছিল না বলেও রায়ে বলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে অস্কারজয়ী পরিচালকের ছেলে পিপ্পো জেফিরেলি দাবি করেছিলেন, ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ সিনেমায় দুই প্রেমিকের ভালোবাসা দেখানো হয়েছে। তার কথায়, ‘ওই দৃশ্যের সঙ্গে পর্নোগ্রাফির তুলনা করা মোটেও উচিত নয়। কারণ, ওই দৃশ্যে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখানো হয়েছে মাত্র। নোংরামি করা হয়নি।’
‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ ছাড়াও ১৯৭৭ সালে টিভি মিনি সিরিজ ‘জিসাস অব নাজারেথ’-এ ‘মা মেরি’ চরিত্রে অভিনয় করেন অলিভিয়া। ২০১৫ সালে সবশেষে তাকে ‘সুইসাইট স্কোয়াড’ সিনেমায় দেখা গেছে।