জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সকাল থেকেই মানুষের সমাগম ঘটে/ছবি: বার্তা২৪.কম

সকাল থেকেই মানুষের সমাগম ঘটে/ছবি: বার্তা২৪.কম

বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: জমে উঠেছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে মেলার ১১তম দিনে দর্শনার্থীদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মত। শুরুতে লোক সমাগম কম হলেও শনিবার( ১১ জানুয়ারি) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ।

মুজিববর্ষ ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানের জন্য শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) মেলা বন্ধ ছিল। তবে সপ্তাহের ছুটির দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই মানুষের সমাগম শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

দুপুরের পর থেকে বাড়তে থাকে ক্রেতার সমাগম। স্টলগুলোতে নারী-পুরুষ শিশু নির্বিশেষে ভিড় করছিল। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই এসেছেন মেলায় পছন্দের জিনিস কিনতে।

বেশিরভাগ পণ্যে ছাড় ও নানা অফার থাকায় বেচাকেনা জমে উঠেছে

মেলায় প্লাস্টিক পণ্য, অ্যালুমিনিয়ামের গৃহস্থালি (ক্রোকারিজ), ইমিটেশনের গয়না, কসমেটিকসের স্টলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেশি। তবে শীতের পোষাকের দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

বিজ্ঞাপন

এবারের মেলায় প্রথম দিন থেকেই শীতের পোশাক ভালই বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেশ কিছু বিক্রেতা। ক্রেতা- দর্শনার্থীদের অনেকেই কাঠ ও প্লাইউডের আসবাব ও ইলেকট্রনিক পণ্যের স্টলগুলো ঘুরে দেখছেন এবং কোন পণ্যে কত ছাড় তা জানতে চাচ্ছেন। কিছু পণ্যে মূল্যছাড়সহ বিভিন্ন সুবিধা থাকায় ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন।

অনেক বিক্রেতা জানালেন, প্রথম কয়েক দিনে বিক্রি না থাকলেও আজ ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। দিন বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি আরও বাড়বে।

বিক্রি ভালো হওয়ায় স্বস্তিতে বিক্রেতারা

মিরপুর থেকে আবুল হাসান ছয় বছরের মেয়ে ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মেলায় এসেছেন। মেয়ের জন্য খেলনা ও পোশাক কিনেছেন। জানালেন, গতকাল শুক্রবার আসতে চেয়েছিলেন। তবে মেলা বন্ধ ছিল। তাই আসা হয়নি। প্রতিবছরই আসা হয়। কিছু কেনাকাটাসহ শিশুদের কিছুটা বিনোদন দিতে মেলায় আসা।

পুরান ঢাকার ইসলামপুর থেকে মেলায় এসেছেন রাবেয়া বেগম। জানলেন, তিনি তার ছেলেকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। যেমন দূষণ বা ধূলাবালির কথা শুনেছেন তেমনটি নেই বলে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি তার ছেলের জন্য একটি জ্যাকেট কিনেছেন। নিজেও কিছু তৈজসপত্র কিনতে চান।

এবারের বাণিজ্য মেলার অন্যতম আকর্ষণ ‘সারা’। মেলার স্টলের ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, এবারের মেলায় ‘সারা’র বিক্রি খুবই ভাল। গত ১০ দিনে প্রতিদিনই ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে।

ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ

শীতের ফ্যাশনকে নতুন মাত্রা দিয়ে ‘সারা’ এবার নিয়ে এসেছে সাশ্রয়ী মূল্যে উন্নতমানের শীতকালীন পোশাক সামগ্রী। বিভিন্ন ডিজাইনের জ্যাকেটের পাশাপাশি মেলার আউটলেট পাওয়া যাচ্ছে শতাধিক ডিজাইনের শীতকালীন পোশাক।

তিনি বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছে শিশুদের জন্য এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পোশাক। শীতকালীন এসকল পোশাক সামগ্রীর মধ্যে আছে ম্যানজ অ্যান্ড ওমেন্স বোম্বার জ্যাকেট, ডেনিম জ্যাকেট, ডেনিম শাল, ডেনিম টপস এন্ড কুর্তি, লেদার জ্যাকেট, ম্যানজ এন্ড ওমেন্স কুইল্টেড ভেস্ট, ম্যানজ এন্ড ওমেন্স পাফার জ্যাকেট, বিভিন্ন রকমের হুডি, ম্যানজ ক্যাজুয়াল ব্লেজার, ফ্ল্যানেল শার্টস, ফ্ল্যানেল স্কার্ফ, কিডস পাফার জ্যাকেট এবং কিডস হুডিজ। ৫০০ থেকে শুরু করে ২৫০০ টাকার মধ্যেই এসকল পোশাক আপনি পেতে পারেন শুধুমাত্র সারা’তে।

আরও রয়েছে শার্ট, এথনিক টপস, এক্সক্লুসিভ পার্টি টপস, নিট টি শার্ট, লেগিংস, ডেনিম, লন, শ্রাগস, পালাজো ফর লেডিস এন্ড গার্লস, জিন্স ফর ম্যানজ অ্যান্ড বয়েজ, পোলো টি শার্ট।

ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, স্নোটেক্সের লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা’ কাজ শুরু করেছে ২০১৮ সালের মে মাস থেকে। সবই দেশী পণ্য। মেলায় পন্যে সরাসরি ডিসকাউন্ট নেই। তবে বিকাশে পণ্য কিনলে ৫ শতাংশ, এনআরবি ও সাউথ ইস্ট ব্যাংকের কার্ডে কিনলে ১০ শতাংশ এবং জিপি স্টার হলে ১২ শতাংশ ছাড়া দেওয়া হচ্ছে।

অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন মেলায়

বেস্ট বাই-এর সেলস এক্সিকিউটিভ রাইহানুল ইসলাম জানালেন, আমরা মেলায় সবচেয়ে বেশী পণ্য বিক্রি করছি। প্রতিদিন বিক্রি ২৫ লাখ টাকার মত। গতকাল জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী পালনের জন্য মেলা বন্ধ ছিল। বন্ধ থাকার পরও এটিকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। কারণ যার জন্য এ দেশ আমরা পেয়েছি তার জন্য এ দিবস পালনে আমরা গর্বিত।

তিনি বলেন, আজ মেলায় দর্শনার্থী বেড়েছে। আমাদের তিনশ পণ্য রয়েছে। ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। ফার্নিচার কিনলে ঢাকার মধ্যে ফ্রি ডেলভারি।

দিল্লি এ্যালুমিনিয়ামের প্রধান বিক্রয় কর্মকর্তা ইয়াসিন গনি মেলায় জনসমাগম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করলেন। তিনি জানালেন, গত বছরের তুলনায় এবার তাদের বেচাকেনা ভাল হয়নি। তারওপর গতকাল ছিল বন্ধ। তাছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে মানুষ কম আসছে। মানুষ এলেও তাদের বিক্রি সন্তোষজনক নয়। তার স্টলে ভারত ছাড়াও বেশীরভাগ পণ্য দেশি এবং কিছু পণ্য থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে।

শিশু মেলা-১ এর কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন বলেন, আজ সকাল থেকেই মেলায় মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে। এবারের বাণিজ্য মেলায় আর একটি রাইড রয়েছে শিশু মেলা-২। আমরা শিশুদের সর্বাত্মক বিনোদন দেওয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছি। তবে আমাদের সবচেয়ে অগ্রাধিকার ‘নিরাপত্তা’।