এলসি খোলার সুযোগ দাবি

৯ কারখানা বন্ধে লক্ষাধিক কর্মী বেকার হওয়ার শঙ্কা

  • ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারায় কাঁচামালের অভাবে ৯টি কারখানা বন্ধ হলেও কর্মীদের বেতন-ভাতা বন্ধ করেনি এস আলম গ্রুপ। গত ৫ আগস্টের পর সরকার দেশের শীর্ষস্থানীয় এই শিল্পগ্রুপের আগের এলসি স্থগিত করে এবং নতুন করে আর কোনো এলসি খুলতে দেয়নি। এ কারণে কাঁচামালের অভাবে একে একে ৯টি কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে এখনো বেতন পেলেও কর্মীদের প্রশ্ন কারখানা বন্ধ থাকলে কর্তৃপক্ষ এভাবে কতদিন চালাবে? তারা অবিলম্বে কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

বিজ্ঞাপন

কর্মীরা আশা করেন, সরকার কারখানাগুলো খোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। নইলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কারখানায় নিয়োজিত লক্ষাধিক কর্মী চাকরি হারিয়ে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে আর্থিক ঝুঁকিতে পড়বেন।

গ্রুপটির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, সরকারের উচিত কোম্পানির ফ্রিজ করা ব্যাংক হিসাব খুলে দিয়ে ঋণপত্র খোলার সুযোগ দেওয়া। ঋণপত্র খুলতে পারলে কাঁচামাল আসবে এবং ফের কারখানা চালু হবে। তা ছাড়া দেশের তেল, চিনিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের চাহিদার বড় একটি অংশ এস আলম গ্রুপ মিটিয়ে থাকে। কারখানাগুলো চালু করতে না পারলে ভোগ্যপণ্যের বাজারেও বড় ধরনের সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হবে। সংকট সৃষ্টি হলেই দাম বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়। তাতে শেষ পর্যন্ত দুর্ভোগে পড়ে দেশের সাধারণ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

তারা জানান, চট্টগ্রামে বন্ধ হওয়া এস আলম গ্রুপের ৯টি কারখানার মধ্যে রয়েছে কর্ণফুলীর এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাঁশখালীর এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, ইনফিনিটি সিআর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, চেমন ইস্পাত লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ও এস আলম স্টিল। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষভাবে ১২ হাজারের বেশি কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে বিক্রয়কর্মী, ডিলার, এজেন্ট, আমদানি-রপ্তানির কাজে নিয়োজিত কর্মী, পণ্য ওঠানামার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকসহ লক্ষাধিক কর্মী এই শিল্পগ্রুপে নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, অতিসত্বর কারখানাগুলো চালু না হলে তারা সবাই বিপদে পড়বেন।

এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসমত আলী বলেন, ‘কারখানা বন্ধ থাকলে শেষ পর্যন্ত কর্মীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ৫ আগস্টের পর কাঁচামালের অভাবে কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ নিয়মিত বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এভাবে কতদিন চালানো সম্ভব। সরকারের উচিত অতিসত্বর এলসি খোলার সুযোগ দিয়ে কারখানা চালু করার ব্যবস্থা করা। ব্যবসা করার সুযোগ না দিলে শেষ পর্যন্ত কর্মীরাই বেকার হবেন।’

তাদের দায়িত্ব কে নেবে? এমন প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘তারা নতুন করে কোথায় চাকরি পাবেন? এ বিষয় মাথায় রেখে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’

এস আলম কোল্ড রোল স্টিল মিল লিমিটেডের প্রশাসনিক প্রধান (কারখানা) মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘কারখানা বন্ধ রাখার কারণ আছে। তার মতে, কারখানা খোলা রেখে কোনো লাভ নেই। কারণ কারখানা খোলা রাখলেও উৎপাদন তো করা যাচ্ছে না। বরং খরচ ঠিকই হয়। সেই সুনির্দিষ্ট খরচ বাঁচানোর জন্যই মূলত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তবে বেতন-ভাতাদি তারা পাচ্ছেন।’

তিনিও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘লাখো কর্মীর দিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকালে সরকার অবশ্যই কারখানাগুলো খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।’