পেঁয়াজের কেজি আবার ১৭০ টাকা!

  • নাজমুল হাসান সাগর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পেঁয়াজের দাম বেশি, ছবি: বার্তা২৪.কম

পেঁয়াজের দাম বেশি, ছবি: বার্তা২৪.কম

বিগত কয়েকদিন কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও আবার বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। গত বছরের শেষ ভাগে হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যটি ছিল আলোচনার শীর্ষে।

সারাদেশের মানুষকে ভোগানোর পর কিছু দিন দাম কম থাকায় আলোচনার বাইরে ছিল পেঁয়াজ। তবে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে।

বিজ্ঞাপন

দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকলেও আগের দরে বিক্রি হচ্ছে চায়না ও তুরস্কের পেঁয়াজ। চায়না পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি এবং তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।

পেঁয়াজের দামও বাড়তি, ছবি: বার্তা২৪.কম

পেঁয়াজের দাম বাড়তি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে কারওয়ানবাজারের পেঁয়াজের ২৪ নম্বর আরতদার আলাউদ্দিন আলী বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত দেশে পেঁয়াজের দাম কমবে না। আমরা ভেবেছিলাম, নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলে দাম কিছুটা কমবে এবং আমরা শান্তিমত ব্যবসা করতে পারব। কিন্তু আবহাওয়া ও নানা সমস্যার কারণে পেঁয়াজের দাম কোনোভাবেই কমছে না।

কারওয়ান বাজারে মাছের দামও বাড়তি, ছবি: বার্তা২৪.কম

এদিকে চায়না আদা ১৫০ টাকা কেজি, দেশি আদা ১৮০ টাকা কেজি, চায়না রসুন ১৪০ টাকা কেজি, দেশি রসুন ১৮০ টাকা কেজি, এক কোয়ার রসুন ২৩০ টাকা কেজি, তিন কোয়ার রসুন ১৮০ টাকা কেজি।

এ বছরের প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কম হলেও বৃষ্টির কারণে সুযোগ নিচ্ছেন দোকানিরা। বৃষ্টির অজুহাতে যার কাছ থেকে যেভাবে পারছেন, সেভাবে দাম বাড়িয়ে রাখছেন তারা। কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি করোল্লা খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, শিম ৩০, মুলা ২০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০, কায়তা ৬০ টাকা, নতুন আলু ২৫-২৮ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা ও শালগম ৩০ টাকা। প্রতি পিস ফুলকপি ৩৫-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া (ছোট) ৪০ টাকা, লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। মৌসুমের বিভিন্ন শাক বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা আঁটি দরে।

কারওয়ান বাজারে মাছের দামও বাড়তি, ছবি: বার্তা২৪.কম

সবজি কিনতে আসা গৃহিনী শামসুন্নাহার বলেন, এবার এখনো শীতের সবজিগুলোর দাম কমছে না কেন? আর কত দিন এত টাকা দিয়ে কাঁচা বাজার কিনতে হবে? প্রথম অবস্থায় দাম বাড়তি থাকলেও প্রতি বছর মাঝামাঝি এসে দাম করে। কিন্তু গত বছর তা কমেনি। নতুন বছরেও দাম কমারই নাম নেই। বাজার করতে এলেই দাম শুনে অস্বস্তি লাগে।

কারওয়ান বাজারে সবজির দামও বাড়তি, ছবি: বার্তা২৪.কম

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আইড় ৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, বাইন ৮০০ টাকা, বাচা ৪০০ টাকা, পুঁটি ৩৩০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা ৪০০ টাকা, পোয়া ৬০০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, কোরাল ৫৫০ টাকা, লইট্টা ২০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, মলা ৪০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, টেংরা ৫০০ টাকা, মেনি ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালী মাছ প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। আকার ভেদে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়। 

কারওয়ান বাজারে সবজির দামও বাড়তি, ছবি: বার্তা২৪.কম

মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি খাসির মাংস ৯০০ টাকায়, বকরির মাংস ৮০০ টাকায় ও গরুর মাংস ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশ কিছু দিন ধরে খাসির মাংসের দাম বাড়ছেই। গত সপ্তাহের তুলনায় ৫০ টাকা করে বেড়েছে খাসি ও বকরির মাংসের দাম। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মাংস বিক্রেতারা বলছেন, সাপ্লাই কম, চাহিদা বেশি। তাই দামটাও বেশি।

এদিকে, পাকিস্তানি মুরগি ২৪০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার ১৩০ টাকা ও দেশি হাঁস ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পেঁয়াজ, মাংস ও মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বৈরি আবহাওয়া, যোগাযোগ সমস্যা ও সরবরাহ কম থাকায় এসব পণ্যের দাম বাড়তি।