সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর থেকেই ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ শুরু করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে অগ্নি নিরাপত্তা সুবিধা নেই এমন ৭৪৮টি কারখানার তালিকা বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) কাছে পাঠানো হয়েছে।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যেসব কারখানা অগ্নি নিরাপত্তার শর্ত পূরণ করতে পারবে না সেসব কারখানার ইউটিলাইজেশন ডিক্লিয়ারেশন (ইউডি) সনদ দেওয়া দেবে না বিজিএমইএ। ফলে ওইসব কারখানা আর তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারবে না।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘৭৪৮টি কারখানা অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এসব কারখানার তালিকা বিজিএমইএ’তে পাঠানো হয়েছে। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ে শর্ত পূরণ করতে না পারলে কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিজিএমইএ’র নেতারা আমাদের জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মধ্যে শর্ত পূরণ না হলে ইউডি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে কিনা- সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আর সনদ না পেলে কারখানাগুলো রপ্তানি করতে পারবে না।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে গার্মেন্টস মালিক বলেন, ‘দেখুন আমাদের কারখানার ভবন নতুন নয়, পুরাতন। এসব পুরানো ভবনে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সংস্কার করা সম্ভব না। আবার ক্রেতাদের চাহিদাও ভিন্ন ভিন্ন। এখন যদি অগ্নি নিরাপত্তার ইস্যুতে ইউডি সার্টিফিকেট দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা রপ্তানিই করতে পারবো না।’
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিজিএমইএ’র স্বাধীনতা পরিষদের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আমাদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। অনেক কারখানার ভবন ভাড়া নেওয়া। সেক্ষেত্রে যে ধরনের সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে সেটা করতে কারখানা সরিয়ে নিতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে কারখানা সরিয়ে নেওয়া সম্ভব না। তবে মালিকরা বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়েছেন। সুতরাং ভবনের ঝুঁকির বিষয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তা সত্য নয়।’
এদিকে বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে অগ্নি নিরাপত্তা ইস্যুতে আরো অন্তত ২০০-৩০০টি কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।