নদীতে পাট জাগ, দুর্ভোগে ৯ গ্রাম

  • শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নড়াইল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

নড়াইল জেলার চিত্রা, নবগঙ্গা ও কাজলা নদীতে পাট জাগ দেওয়ায় দূষিত হচ্ছে নয় গ্রামের প্রাকৃতিক পরিবেশ। একইসঙ্গে পচা পাটে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি ও মরছে মাছ। পাট পচা দুর্গন্ধে বিপাকে পড়েছে নদী তীরবর্তী হাজারো মানুষ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলার এসব নদীতে কয়েক বছর ধরে মৌসুমে পাট জাগ দেওয়া হচ্ছে। নদীগুলোতে আনুমানিক ২০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে পাট জাগ দেওয়া হয়। এসব নদীর পানি ব্যবহার করে আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার পানিবাহিত রোগে।

বিজ্ঞাপন

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566717189350.jpg

এদিকে মাছ মরে যাওয়ায় মৎস্যজীবী পরিবারগুলো সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। গোসল করা, নিত্য নৈমিত্তিক কাজের জন্য বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদেরকে।

রোববার (২৫ আগস্ট) সরেজমিন দেখা যায়, নড়াইলের সদর ও লোহাগড়া উপজেলার সদরের হবখালী, কাগজিপাড়া, ময়েনখোলা, শংকরপুর, রতডাঙ্গা, তুলারামপুর, লোহাগড়া উপজেলার মিঠাপুর, নলদীসহ নদী, পুকুর, ডোবা, উন্মুক্ত জলাশয় সবখানেই পাট জাগ দেওয়া হয়েছে।

কৃষকরা জানান, জাগ দেওয়ার ফলে পাটের মান ভালো থাকে। এছাড়া মূল্যও বেশি পাওয়া যায়। এজন্য কৃষকরা বেশি পাট জাগ দিচ্ছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566717253777.jpg

সদর উপজেলার গন্ধবখালী গ্রামের মৎস্যজীবী তপন কুমার দাস বলেন, নদীতে পাট জাগ দেওয়ার ফলে পানি পচে নদীর রুই, কাতলা, পুঁটি, শিং, কৈ, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে যাচ্ছে। গত দুমাস ধরে নিজের মাছ ধরার নৌকা ডাঙায় রয়েছে। নৌকাও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আরও দেড় মাস যাবৎ পাট জাগ দেওয়া চলবে বলে তিনি জানান।

কাগজিপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, নদীর পানি ব্যবহারের ফলে খোস পাঁচড়া, চুলকানি হচ্ছে।

ময়েনখোলা গ্রামের সাহেব আলী ও সাইদুর রহমান বলেন, আমরা কৃষক আমাদের বাড়ি নদীর তীরে হওয়ায় নদীতে পাট জাগ ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে নদীতে পাট পচানো হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566717312700.jpg

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৬১৬ হেক্টর জমি। সেখানে আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৯৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩৪ হেক্টর বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. শহিদুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, জেলায় নিবন্ধনকৃত ৮ হাজার ৪১৭ জন জেলে রয়েছে। এর মধ্যে চিত্রা নদীতে মৎস্য স্বীকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে ৩১৪ জন। জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, নদীতে পাট না পচানোর জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিকল্প পদ্ধতিতে পাট পচানোর জন্য সচেতন করা হচ্ছে।