গাইবান্ধা জেলায় গত ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে এবারের বন্যা। এ বছরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে গাইবান্ধার মানুষ। ঘরবাড়িসহ বন্যা কেড়ে নিয়েছে তাদের সহায় সম্বল। বন্যার মূহুর্তে অপর্যাপ্ত ত্রাণ নিয়ে ছিল মানুষদের চরম আহাজারি। দুমুঠো খাদ্যের সন্ধানে ছোটাছুটি করছিল বন্যাদুর্গত মানুষেরা।
এ পরিস্থিতে কোনো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নিতে দেখা যায়নি যথাযথ উদ্যোগ। এমন দুর্যোগের সময় 'এভারগ্রীন জুম বাংলাদেশ' নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি বন্যার্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বন্যাদুর্গত মানুষদের দ্বারে ছুটে গেছেন।
শুধু ত্রাণ সামগ্রী নয়, গৃহহারা মানুষের আসবাবপত্র উদ্ধারসহ নানা ধরণের সহায়তা দেওয়া শুরু করেন তারা। এ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দরা ভলান্টিয়ারদের টিম নিয়ে ঘুরতে থাকেন পানিবন্দি মানুষের দুয়ারে। জুম বাংলাদেশের এই উদ্যোগে অনেকেই ত্রাণবিতরণ শুরু করেন।
সূত্রে জানা যায়, এভারগ্রীন জুম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার মানুষকে ত্রাণ দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। ১৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ পানি, ৩৫ হাজার পিস প্যারসিটামল ঔষধ, ২০ হাজার বোতল কার্বলিক এসিড, ৬ হাজার প্যাকেট বিস্কুট, ৪০ হাজার পিস পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ১৫ হাজার প্যাকেট খাবার স্যালাইন, খিচুড়িসহ ৫ হাজার মানুষকে দেওয়া হয়েছে অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী। এছাড়া গবাদি পশুর জন্য খাদ্যও সরবরাহ করে আসছে সংগঠনটি।
এদিকে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের অক্ষর-জ্ঞান ছাড়াও নৈতিক বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাদানের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ, বস্ত্র বিতরণ, রক্তদান, স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠন কর্মীরা। যার সবই হচ্ছে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা প্রদান, মানসিক বিকাশ সাধন ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনের অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে এ সংগঠন।
তাদের সেবামূলক কর্মকাণ্ড দেখে মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। জুম বাংলাদেশ গাইবান্ধা শাখার সমন্বয়ক মো. মেহেদী হাসান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে জানান, আমরা বিভিন্ন দাতাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করাসহ সংগঠনের অর্থ সমন্বয় করে বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছি।
জুম বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক এসটি শাহীন প্রধান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য আমাদের সহায়তা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। এছাড়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশারি ও গামছা বিতরণ করা হবে।