মিন্নির জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে
বরগুনার চাঞ্চ্যকর রিফাত হত্যা মামলায় প্রধান সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন আদালতে জমা পড়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনটি বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসে পৌঁছায়।
মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারী আসলাম জানান, মিন্নি আদালতে দেওয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করেছেন। আবেদনটি বুধবার সকালে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে পৌঁছেছে।
পরে বিচারক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনের শুনানির তারিখ আগামী ১৪ আগস্ট ধার্য করেন।
এদিকে মামলার নিয়মিত হাজিরা থাকায় এ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর হত্যার দায় স্বীকার করা ১৫ জনের মধ্যে ১৪ আসামিকেই বুধবার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে তোলা হয়। মামলার পরবর্তী তারিখও আগামী ১৪ আগাষ্ট ধার্য্য করেন আদালত। এ মামলায় সন্দেহভাজন আটক রাতুল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পরে তাকে সেইভহোমে পাঠানো হয়েছে, তাই তাকে আদালতে তোলা হয়নি।
বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় গত ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইনসে নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
পর দিন মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আদালত মিন্নির পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী।
পর দিন বৃহস্পতিবার বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন।
গত শুক্রবার বিকেলে মিন্নি একই আদালতে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।