আরব-আমিরাতের খেজুর এখন মুজিবনগরে চাষ
মধ্যপ্রাচ্যের উন্নত জাতের খেজুর গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশে চাষের উপযোগী করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নিবিড় গবেষণা চালাচ্ছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) গবেষকরা। গবেষণার সফলতায় অবশেষে খেজুর ধরতে শুরু করেছে মেহেরপুরের মুজিবনগর জার্মপ্লাজম সেন্টারের গাছগুলোতে।
বিষয়টি নিয়ে আগ্রহের সীমা নেই দূর-দূরান্তের দর্শনার্থী ও স্থানীয় মানুষের। গবেষণার সফলতার মধ্য দিয়ে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের অপেক্ষায় এর সঙ্গে যুক্তরা।
মেহেরপুরের মুজিবনগর জার্মপ্লাজম সেন্টারে সরেজমিনে দেখা গেছে, মাটি থেকে প্রায় আড়াই ফুট দূরত্বে ঝুলছে খেজুরের থোকা। বেশ বড় সাইজের খেজুর, দেখতেও আকর্ষণীয়। সবুজ রঙ থেকে খেজুরগুলো এখন লাল রঙ ধারণ করেছে।
গবেষণা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওমান, সংযুক্ত আরব-আমিরাত, কাতার, সুদান, তিউনেশিয়া, ইরান ও সৌদি আরব থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে উন্নত জাতের খেজুর বীজ। গবেষণা চলছে ব্রি’র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান দেওয়ানের তত্ত্বাবধানে। এই গবেষণা প্লটে এখন মোট খেজুর গাছের সংখ্যা আড়াই হাজার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যেখানে সাত বছর পর খেজুর ধরে, সেখানে মুজিবনগরের এই গবেষণা প্লটে মাত্র তিন বছরের মাথায় খেজুর এসেছে।
তাই বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আবাদ উপযোগী জাত উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। এই গবেষণার সুফল এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন হতে যাচ্ছে বলে জানালেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান।
তিনি জানান, ২০১৪ সাল থেকে ব্রি রাইস ফার্মিং সিস্টেমের আওতায় মুজিবনগর প্রকল্প নামে এই গবেষণা শুরু হয়েছে। খেজুর ও চারা উৎপাদন ছাড়াও এর সঙ্গে পরীক্ষা করা হচ্ছে অন্যান্য ফসলের এগ্রোফরেস্ট্রি সিস্টেম।
গবেষণা প্লটের ব্যবস্থাপক মহিবুল ইসলাম জানান, গেল ২৬ জুলাই ব্রি মহাপরিচালক খেজুরের বাগান পরিদর্শন করেন। এ খেজুরের স্বাদ, মান ও সৌন্দর্য বিশ্বের যেকোনো দেশের খেজুরকে টক্কর দেবে এমন প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এদিকে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আগ্রহ ভরে দেখছেন এই খেজুর বাগান। আর স্থানীয়রা অপেক্ষায় রয়েছেন কবে পাওয়া যাবে এদেশে আবাদ করার উপযোগী উন্নত জাতের খেজুরের চারা আর বীজ। যা আবাদ করে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় স্বপ্ন দেখছেন এখানকার কৃষকরা।