পাট নিয়ে চরম বিপাকে রাজবাড়ীর হাজারো কৃষক

  • সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানি কম থাকায় পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষিরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পানি কম থাকায় পাট জাগ দিতে পারছেন না চাষিরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

চলতি বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদী ছাড়া রাজবাড়ীর উপর দিয়ে প্রবাহিত নদী ও খাল-বিলে এখনো পর্যাপ্ত পানি না আসেনি। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নদী ও খাল-বিল পানিতে থৈ থৈ করার কথা থাকলেও এখনো হাঁটু পানি। বেশির ভাগ বিলে পানি প্রবেশ করেনি। ফলে পাট জাগ দেওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের হাজারো পাটচাষি। 

তবে জেলার কৃষি-সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে আধুনিক পদ্ধতি রিবন রেটিংয়ের মাধ্যমে পাট জাগ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বালিয়াকান্দির জামালপুর ইউনিয়নের হাতিমোহন মাঠে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পাট কেটে ক্ষেতের মধ্যেই ফেলে রেখেছেন। কেউ আবার রাস্তার ওপর রেখেছে। আর কিছু কিছু কৃষক তাদের পাট কেটে ঘোড়ার গাড়িতে করে অন্যকোনো জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন জাগ দেওয়ার আশায়। অনেকে আবার পানির আশায় এখনো পাট না কেটে জমিতেই রেখে দিয়েছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564027737554.jpg

হাতিডাঙ্গামোহন গ্রামের পাটচাষি অসীম কুমার ও শশী বিশ্বাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, এখন পুরো বর্ষা মৌসুম চলছে। অথচ পানির দেখা মিলছে না। এই গ্রামের আশেপাশের কয়েক শত কৃষক এই মাঠে পাট জাগ দিয়ে থাকেন। কিন্তু মাঠে পানি প্রবেশ করেনি। জমিতেও পাট রেখে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে পাট কেটে আপাতত মাঠের মধ্যে ও রাস্তার পাশে রেখে দেওয়া হচ্ছে।

রাজবাড়ী কৃষি-সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে পাটের উৎপাদন বেশি হয়েছে। গত বছর ছিল ৪৬ হাজার ৮০০ হেক্টর। আর এবার চলতি বছর পাট উৎপাদন হয়েছে ৪৭ হাজার ১২০ হেক্টর। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলায় উৎপাদন হয়েছে ৩ হাজার ৯৯০ হেক্টর, বালিয়াকান্দিতে ১২ হাজার ১০০ হেক্টর, পাংশায় ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, কালুখালীতে ৯ হাজার ২৫০ হেক্টর ও সদর উপজেলায় হয়েছে ৯ হাজার ৩০ হেক্টর।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564027755205.jpg

অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘সারাদেশে যে পাট উৎপাদন হয় তার সাত শতাংশ পাটই উৎপাদন হয় এ জেলাতে। এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি পাট চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকরা পাট চাষে বেশি ঝুঁকে। কিন্তু চলতি বছরে খাল-বিলে পানি সংকট থাকায় বিপাকে পড়েছে চাষিরা। তবে আমরা কৃষকদেরকে আধুনিক পদ্ধতি রিবন রেটিংয়ের মাধ্যমে পাট জাগ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। এই পদ্ধতিতে পাট জাগ দিলে কৃষকের কোনো ক্ষতি হবে না।’