জুলাই থেকে সুন্দরবনের খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সুন্দরবনের খাল থেকে মাছ ধরছেন জেলেরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সুন্দরবনের খাল থেকে মাছ ধরছেন জেলেরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

মৎস্য ও জলজ সম্পদ রক্ষায় সুন্দরবনের সব খালে দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে বন বিভাগ। আগামী ১ জুলাই থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, মাছের ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনে প্রায় ৪০০ খাল রয়েছে। এসব খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে অবৈধ জেলেরা। খালে বিষ দেওয়া বন্ধ এবং মাছের অবাধ প্রজনন ও সংরক্ষণ করতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা গেছে, সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। যার মধ্যে জলভাগের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৮৭৪.১ বর্গ কিলোমিটার। যা সমগ্র সুন্দরবনের ৩১.১৫ শতাংশ। এই জলভাগে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে ১৩টি বড় নদ-নদীসহ ৪৫০টি খাল।

 জেলেরা জাল দিয়ে মাছ ধরছেন।
 জেলেরা খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরছেন, ছবি: বার্তা২৪.কম


নদীতে জোয়ার আসলে এসব খালে আসে নানা জাতের মাছ। ভেটকি, রূপচাঁদা, দাঁতিনা, চিত্রা, পাঙ্গাশ, লইট্যা, ছুরি, মেদ, পাইস্যা, পোয়া, তপসী, লাক্ষা, কৈ, মাগুর, কাইন, রূপালী ইলিশসহ রয়েছে ২১০ প্রজাতির মাছ।

এছাড়াও গলদা, বাগদা, চাঁকা, চালী ও চামীসহ ২৪ প্রজাতির চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। বিশ্বখ্যাত শিলা কাঁকড়াসহ ১৪প্রজাতির কাঁকড়ার প্রজনন হয় এসব নদী ও খালে। রয়েছে ৪৩ প্রজাতির মালাস্কা ও এক প্রজাতির লবস্টার। এছাড়াও রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন।

সুন্দরবনে নদীতে জেলেরা
সুন্দরবনের খালে জেলেরা মাছের সন্ধানে, ছবি: বার্তা২৪.কম 


বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘সুন্দরবনের কাঠ (জ্বালানি) সংগ্রহের জন্য বাওয়ালীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব দিয়ে পাস-পারমিট নেয়। তবে অনেকে অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে কেউ কেউ সুন্দরবনের মৎস্য ও মৎস্য প্রজাতির সম্পদ আহরণ করে। সাদা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছের আধিক্য থাকায় এক শ্রেণির অসাধু জেলে অধিক লাভের জন্য সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘খালে বিষ দেয়ায় ছোট-বড় সব মাছ ও মৎস্য প্রজাতির প্রাণী মারা যায়। পাশাপাশি সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আগামী জুলাই-আগস্ট সব খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এই দুই মাস সুন্দরবনের নির্দিষ্ট বড় নদ-নদী থেকে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা।’