হিলিতে খনিজের সন্ধান: নতুন কর্মসংস্থানের হাতছানি
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে দ্বিতীয় পর্যায়ের জরিপে ভূপৃষ্ঠের এক হাজার ৩০০ ফুট গভীরে লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। এতে ওই এলাকায় ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভূ-তাত্বিক জরিপ দল ইসবপুর গ্রামে কূপ খননের মাধ্যমে খনিজ পদার্থের অবস্থান ও পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে। দলটির সদস্যরা বার্তা২৪.কম-কে জানান, জরিপে আশানুরূপ ফল পাওয়া গেলে দেশে এটিই হবে প্রথম খনিজ পদার্থের খনি। ফলে সেখানে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় মনসপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'খনির সন্ধান নিশ্চিত হলে এবং প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হবে।'
জানা গেছে, হাকিমপুর উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রামে চলছে খনি আবিষ্কারের মহাযজ্ঞ। ২০১৩ সালে এই গ্রামের তিন কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদফতর। সেখানে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার ফুট গভীরতায় মূল্যবান ম্যাগনেটিক মিনারেল, হেমাটাইট, ম্যাগনেটাইট ও লিমোনাইট পাওয়া যায়। আর এক হাজার ২০০ ফুট গভীরতায় পাওয়া যায় চুনা পাথর, যা অন্যান্য জায়গার গভীরতার চেয়ে অনেক কম।
এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ছয় বছর গবেষণা করে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় সম্প্রতি ইসবপুরে দ্বিতীয় জরিপে কূপ খননের কাজ শুরু হয়। এ কাজে ৩০ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল তিন শিফটে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদফতরের (জিএসবি) উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'এই অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। আর একারণে এখানে আগ্নেয়শিলার অবস্থান থাকায় খনিজ পদার্থ পাওয়ার সম্ভাব্যতা রয়েছে।'
জিএসবি’র ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুদ রানা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'গত ২১ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে খনিজ সম্পদের মজুদ, বিস্তৃতি ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ড্রিলিং শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এক হাজার ৭৬০ ফুট ড্রিলিং করা হয়েছে। আশা করছি ভালো কিছু পাওয়া যাবে।'