৩০-৩৫ কেজি চালে কী ঈদ হয়?
পরিবার-পরিজন নিয়ে সবাই যখন ঈদ আগমনের আনন্দে মত্ত, তখন বেকার দিন কাটাচ্ছেন বরগুনার প্রায় ৩৯ হাজার জেলে। ঈদের নামমাত্র আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও কোনো আনন্দ নেই জেলার উপকূলের জেলে পল্লীগুলোতে।
কারণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ৬৫ দিন মাছ ধরতে পারবে না তারা। আর মাছ ধরতে না পারলে জেলেদের উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। তখন তারা ৩ বেলা ঠিকমতো খেতেও পারে না। ফলে আসছে ঈদের আনন্দও ম্লান হয়ে গেছে তাদের।
এদিকে এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সরকারিভাবে ঈদের আগে জেলেদের ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও দিচ্ছে ৩০-৩৫ কেজি করে। জেলেরা বলছে এই চাল দিয়ে কী ঈদ করা যায়?
আর মৎস্য অফিস বলছে, বরগুনার ৩৯ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
উপকূলীয় এলাকা পাথরঘাটার জেলে পল্লীগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, নিস্তব্ধ হয়ে আছে মৎস্য ঘাট। নেই জেলেদের কোনো ব্যস্ততা আর হাঁকডাক। প্রায় প্রতিটি জেলে পরিবারেই চলছে টানাপোড়েন। অনেক পরিবারই ঈদের দিন ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারবে না বলে জানিয়েছে।
মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ নদীতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পুনর্বাসন না করায় চরম বিপাকে পড়েছে তারা।
তালতলীর নলবুনিয়া গ্রামের এমাদুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘৩০-৩৫ কেজি চালে কী ৭ জনের সংসারে ঈদ হয়? শুধুই আশা দেখানো ছাড়া আর কিছু না।’
পাথরঘাটা জেলে পল্লীর ফারুক বার্তা২৪.কমকে জানান, তার সংসারে ৮ জন সদস্য। প্রতিদিন মাছ ধরে যে অর্থ পেতেন তা দিয়ে কোনো রকমে দিন চলে যেত। ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের কারণে সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। ঈদে কাউকে নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি তিনি।
জেলে জাহাঙ্গীর জানান, তারা অনেকেই মহাজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জাল ও নৌকা কিনেছেন। কিন্তু সে টাকা এখন পরিশোধ করতে পারছেন না।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৪০ কেজি করে চাল পাচ্ছে জেলেরা।
জেলা প্রশাসক মো. কবীর মামুদ বার্তা২৪.কমকে জানান, বরগুনা জেলায় ৩৯ হাজার জেলেকে ৪০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে।