গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রাণের ফসল ভুট্টা

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

‘স্বাদে ভরা রসমঞ্জুরীর ঘ্রাণ, চরাঞ্চলের ভুট্টা-মরিচ গাইবান্ধার প্রাণ’ এই স্লোগানে গাইবান্ধার চরবাসী ভুট্টা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কৃষক-কৃষাণীরা পবিত্র রমজানে বিরতিহীনভাবে হারভেস্ট মেশিনে ভুট্টার মোচা ভেঙ্গে দানা বের করছেন।

কৃষকদের স্বপ্নের এই ফসলে এবার আশানুরূপ ফলন অর্জিত হওয়ায় চাষিদের মধ্যে প্রাণভরা হাসি ফুটেছে। সম্প্রতি বৈরী আবহাওয়া থেকে রেহাই পেতে মাড়াই করা ভুট্টা ঘরে তুলতে আপ্রাণভাবে চেষ্টা করছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

গাইবান্ধার কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, জেলার সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নদী বেষ্টিত। এসব এলাকায় রয়েছে কামারজানি, কাপাসিয়া ও মোল্লার চরসহ বিভিন্ন চর। এসব চরে মরিচের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ ভুট্টার আবাদ হয়। ভুট্টা চাষেই চরাঞ্চলের মানুষ নির্ভরশীল। বছরের রবি ও খরিপ মৌসুমে এ এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভুট্টা আবাদ করে আসছেন। প্রাণপ্রিয় এই ফসলে এখানকার কৃষক-শ্রমিকরা অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়েছেন।

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রাণের ফসল ভুট্টা

কামারজানি চরের গোঘাট গ্রামের আবদুল হাই বার্তা২৪.কমকে জানান, ভুট্টার আবাদ বেশ লাভজনক। এ ফসল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে পরিবারের মৌলিক চাহিদা মেটানো হয়।

ভুট্টা সংগ্রহ ও মাড়াই প্রসঙ্গে হাসেন আলী নামের এক কৃষক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভুট্টার গাছ ও মোচা সবুজ থেকে হলুদ রংয়ের হলে পরিপক্ক হয়। তখন গাছ কেটে ফেলে মোচা সংগ্রহ করি। এরপর মোচাগুলো বাড়িতে এনে ৩/৪দিন রোদে শুকানো হয়ে থাকে। উপযুক্ত সময়ে হারভেস্ট মেশিনের মাধ্যমে মোচা থেকে দানা বের করা হয়। এতে অতিরিক্ত শ্রমিক লাগে।

ভুট্টা চাষের আয়-ব্যয় সম্পর্কে মো. তারা মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিঘা প্রতি ফলন হয় ২০-২৫ মণ। বর্তমান বাজারে ৬০০ টাকা মণ বিক্রি হয়। চাষাবাদে সর্বসাকুল্যে খরচ হয় ৫-৬ হাজার টাকা।

গাইবান্ধার চরাঞ্চলে প্রাণের ফসল ভুট্টা

শ্রমিক সাহিদা বেগম, নাজির উদ্দিন ও মেহেন্নেকা বেগম বার্তা২৪.কমকে জানান, আমাদের এলাকার গৃহস্থরা ভুট্টা আবাদ করার ফলে সেখানে আমরা দিনমজুরির কাজ করি। এ থেকে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা পারিশ্রমিক পাই। জ্বালানি জন্যও ভুট্টার গাছ সংগ্রহ করা হয়।

কামারজানি ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মাহাবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ অঞ্চলের ভুট্টা চাষিদের জন্য বিশাল এক তথ্য ভাণ্ডার রয়েছে। এ তথ্যমতে তারা সরকারিভাবে বিভিন্ন কৃষি সহায়তা পান।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কালাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, চরাঞ্চলে ধানের আবাদ করা সম্ভব না হওয়ায় এখানকার কৃষকদের ভুট্টা আবাদে উৎসাহিত করা হয়। স্বল্প খরচে অধিক লাভ পেয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকে পড়েছেন কৃষকরা।