ফণীর প্রভাব: কাঁচা ঘর-বাড়ি ধ্বংস, ফসল নষ্ট ও হুমকির মুখে বেড়িবাঁধ
সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ফণীর আঘাতে ছয় শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ির ক্ষতি হয়েছে।নষ্ট হয়েছে জেলায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল এবং শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ক্ষতি হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
এছাড়া শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের গাইনবাড়ি আশ্রয়কেন্দ্রে আয়না মতি বিবি (৯২) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের মৃত কওছার আলীর স্ত্রী। রাতে তিনি আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার পর অসুস্থ হয়ে মারা যান তিনি।
ফণীর কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর কুড়িকাউনিয়া ও প্রতাপনগর এবং দেবহাটা উপজেলার খানজিয়া নামক স্থানে ইছামতী নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পদ্মপুকুরের কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে উপকুলীয় এলাকাবাসী। জেলার চিংড়ি ঘের মালিকদের কাটছে নির্ঘুম রাত। রাত আসলেই তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে অজানা আতঙ্ক। দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলেই তাদের সর্বনাশ। তবে, অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরসহ কিছু কিছু এলাকায় শনিবার (৪ মে) দুপুরের পর থেকে আকাশ পরিস্কার হয়ে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে মানুষ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। সেখানে আবহাওয়া এখন অনেকটা স্বাভাবিক। তবে সেখানকার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাতে সুপেয় পানি ও শুকনা খাবারের অভাব দেখা দেয় বলে অনেকেই জানান।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় ৬০০ কাঁচা ঘর-বাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া জেলায় ২ হাজার হেক্টর ফসলি জমির এবং শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও জানান, দুর্যোগ কবলিত মানুষের মাঝে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ৩১৬ মেট্রিক টন চাল, ১১ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা, ১১৭ বান টিন, গৃণ নির্মাণে ৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা ও ৪০ পিস শাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। জেলার ১৬০টি আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও দুর্যোগ কবলিত মানুষ অবস্থান করছেন।