আসছে ফণী, দিশেহারা লালমনিরহাটের কৃষকরা

  • নিয়াজ আহমেদ সিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লালমনিনহাট, বার্তা২৪. কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফণী আতঙ্কে কৃষকরা কাটছেন ধান / ছবি: বার্তা২৪

ফণী আতঙ্কে কৃষকরা কাটছেন ধান / ছবি: বার্তা২৪

লালমনিরহাটের প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা ও বোরো ধানে পাক ধরেছে। যার জন্য আংশিক জমিতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কয়েকদিন পরেই শুরু হবে ভুট্টা উত্তোলন। তবে ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানার পর কলকাতার ওপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এমন আশঙ্কায় দিশেহারা লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার কৃষকরা।

সারাদিন প্রচণ্ড গরম শেষে শুক্রবার (৩ মে) ভোর থেকে হঠাৎ করে লালমনিরহাটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এতে লালমনিরহাট,পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। এমন অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। পাশাপাশি ক্ষতি হবে চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষিদের। তারা জানলেন, বালুচরে তামাক ও ভুট্টাসহ সবজি ভালো চাষ হয়। তাই এ অঞ্চলের মানুষ বেশিরভাগ কৃষকরা ভুট্টা চাষ করে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ফণীর ভয়ে তারা আতঙ্কিত।

বিজ্ঞাপন

 https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/04/1556908132965.jpg

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার মোট ৪৮ হাজার ১৫০ হেক্টর আবাদি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। আর ভুট্টা চাষ হয়েছে ২৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর আবাদি জমিতে।

তিস্তাপাড়ের কৃষক আমিনুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমির পুরো ধান আধাপাকা হয়েছে। এ অবস্থায় ধান কাটতে ৩০০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা করে জনপ্রতি দিতে হচ্ছে। ধান নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি, জানি না কী হবে।’

হাতীবান্ধার কৃষক আলিমুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘১০ জন ধান কাটা কৃষাণ নিয়েছি। কিন্তু ভোর থেকে আকাশে মেঘ দেখা যাচ্ছে। পড়ছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এতে করে কী হবে আমাদের ধানের, আল্লাহ জানেন।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/04/1556908052304.jpg

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিদু ভুষন রায় বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ৮০ শতাংশ পাকা বোরো ধান কাটতে এবং ভুট্টা, চীনা বাদামসহ পরিপক্ব সব ফসল ঘরে তুলতে কৃষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

আবহাওয়া অফিসের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারে মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণী কিছুটা দুর্বল হয়ে ভারতের উপকূলীয় ওড়িশায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকালের মধ্যে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/04/1556908173268.jpg

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারে মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।