পঞ্চগড়ে করতোয়ার উল্টো স্রোতে পুণ্যস্নান

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পঞ্চগড় বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পঞ্চগড়ে করতোয়ার উল্টো স্রোতে পুণ্যস্নান, ছবি: বার্তা২৪

পঞ্চগড়ে করতোয়ার উল্টো স্রোতে পুণ্যস্নান, ছবি: বার্তা২৪

মধুকৃষ্ণের ত্রয়োদশ তিথি উপলক্ষে পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান উৎসব।

নিজেকে পাপমুক্ত এবং স্বর্গীয় পিতা-মাতা আত্মীয় স্বজনের মঙ্গল কামনায় এখানে স্নান করছেন সনাতন হিন্দুধর্মাবলম্বীরা।

বিজ্ঞাপন

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বোয়ালমারী এলাকায় করতোয়া নদীর উত্তর মুখী স্রোতে মঙ্গলবার সকাল থেকে এই পুণ্যস্নান শুরু হয়।

এ উপলক্ষে নদীর দুই পাড়ে বসেছে মেলা । ৪ দিন ব্যাপী এই স্নান উৎসবে আশে পাশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। স্নান উপলক্ষে সনাতন হাজারো সাধু সন্ন্যাসীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

প্রতিবছরের মতো এবারো বোদা উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় গঙ্গা মন্দির কমিটি ও বারুণী স্নান উৎসব উপলক্ষে ৪ দিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে ।

স্থানীয়দের মতে প্রায় তিনশত বছর ধরে বোদা উপজেলার কাজলদিঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের বোয়ালমারী এলাকায় করতোয়া নদীর উত্তর স্রোতে মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথি উপলক্ষে স্নান উৎসব পালন করে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

স্নান করতে এসে ভক্তরা দেহ-মনকে পরিশুদ্ধ করতে অনেকে মাথার চুল বিসর্জন দেন, পূজা অর্চনা করেন। তারপর তারা স্নানমন্ত্র পাঠ করে হাতে বেল পাতা, ফুল, ধান, দূর্বাঘাস, হরিতকী, কাঁচা আম, ডাব, কলা ইত্যাদি অর্পণের মাধ্যমে স্নান সম্পন্ন করেন।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে, যে স্থানে নদীর প্রবাহ সোজা উত্তরমুখী সেই স্থানে স্নান করা পুণ্যের কাজ। ধর্মীয় বিধান মতে জীবনে মরণে স্নান হলো হিন্দুদের এক অখণ্ড মহামন্ত্র। স্নানের পবিত্র ধারায় দেহ ও মনকে ধন্য করায় এক আত্মিক সাধনা।

করতোয়া নদীর এই স্থানটি প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত উত্তরমুখী স্রোতে প্রবাহিত হয়। তারা এখানে এসে পবিত্র হওয়ার জন্য মাথার চুল বিসর্জন ও পূজা অর্চনা করেন।

নীলফামারী জেলার জলধাকা উপজেলা থেকে আগত হৈমন্তী রানী জানান, তার বাবা মা স্বর্গে গেছেন। তাদের মঙ্গল কামনায় এখানে স্নান করতে এসেছি ।

তেঁতুলিয়া উপজেলার গিতালগছ গ্রামের লক্ষণ চন্দ্র মালাকার বলেন, ‘অনেক পাপ করেছি। স্নান করে পাপমুক্ত হবো। পুণ্য অর্জন করবো। এই প্রার্থনা নিয়ে এখানে এসেছি।

স্নান উপলক্ষে এখানে ৭ দিন বারুণী মেলাও শুরু হয়েছে। সকল শ্রেণীর মানুষের বিনোদনের জন্য মেলায় যাত্রা, সার্কাস, মোটরসাইকেল খেলাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় নানান জিনিসপত্র বেচাকেনা চলবে।