স্কুল বন্ধ রেখে ১৫ দিনের ভ্রমণে শিক্ষকরা!
শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রমোদ ভ্রমণে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়ার মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। ১৬ মার্চ থেকে টানা ১৫ দিনের ছুটি শেষে আগামী ২৮ মার্চ শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
শুধু তাই নয়, ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠান উদযাপন না করেই শিক্ষকদের ভ্রমণ কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে গোটা মহলকে। এছাড়া আর কিছু দিন পরে আবার রমজানের জন্য দীর্ঘ ছুটি থাকবে।
এদিকে এসএসসি পরীক্ষার দীর্ঘ ছুটির পর আবারও টানা ছুটি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বুধবার (২০ মার্চ) সকালে শহরের এনএস রোডস্থ মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল প্রাঙ্গণ জনশূন্য, মূল ফটক খোলা থাকলেও প্রতিটি ক্লাসরুমে তালা ঝুলছে।
মূল ফটকের ভেতরেই দারোয়ান বসে মুঠোফোনে কথা বলায় ব্যস্ত। বিদ্যালয় ছুটি কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘গেটে নোটিশ টানানো আছে গিয়ে দেখেন।’
পরে নোটিশে লেখা রয়েছে, কুষ্টিয়া মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নার্সারি থেকে দশম শ্রেণির সম্মানীত সকল অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অবগত করা যাচ্ছে যে, আগামী ১৬ মার্চ শনিবার থেকে ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শিক্ষকবৃন্দের শিক্ষা সফর উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি থাকবে। আগামী ৩০ মার্চ শনিবার থেকে বিদ্যালয় যথারীতি ক্লাস চলবে।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, স্কুল ছুটি দিয়ে পরিবার নিয়ে ভারত ঘুরতে গেছেন শিক্ষক সদস্যরা। প্রধান শিক্ষক মনিতা মানকিন তার ক্ষমতা বলে সংরক্ষিত ছুটি দিয়ে এ ভ্রমণে গিয়েছেন। সামনেই প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ার কারণে প্রায় একমাস স্কুল বন্ধ ছিল। এরপর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে সফরে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষকদের কাছ থেকে এমন দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরণ প্রত্যাশিত নয়।
তবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রমোদ ভ্রমণে যাবার বিষয়ে অবহিত নন জানিয়ে কুষ্টিয়ার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জেলার বাইরে কোনো বনভোজন কিংবা সফরে গেলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়। মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে সফরে যাবার বিষয়ে অবহিত করেননি। কর্মদিবসে টানা ছুটি না দিয়ে, তারা যে কোনো ছুটির দিনের সাথে সমন্বয় করে সফরে যেতে পারতেন। এ ক্ষেত্রে তারা মোটেই দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দেননি।’
বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক ও শিক্ষা আইসিটি) আজাদ জাহান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের সফরের বিষয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত বা মৌখিক কোনো অনুমতি নেননি। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রমোদ ভ্রমণ সমর্থনযোগ্য নয়।’
বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।