কারও কাছে হাত বাড়াবেন না প্রতিবন্ধী ডিপটি খাঁন

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ছোট একটি দোকান চালিয়ে সংসার চালান ডিপটি খাঁন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে ছোট একটি দোকান চালিয়ে সংসার চালান ডিপটি খাঁন/ ছবি: বার্তা২৪.কম

জন্মগত প্রতিবন্ধী ডিপটি খাঁন (৩০)। দুইটি পা থাকলেও তা অচল। হাত দুটিরও একই অবস্থা। এই কারণে দাঁড়াবার শক্তি নেই তার। তারপরও দমে যাননি তিনি। জীবনযুদ্ধে নিজে কিছু করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন।

জানা গেছে, ডিপটি খাঁন গাইবান্ধার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ সন্তোলা গ্রামের আদম খাঁনের ছেলে। পাঁচ শতক বসতভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই তাদের। তিন ভাই-বোনের মধ্যে ডিপটি খাঁন সবার বড়। লেখাপড়া করার ইচ্ছা থাকলেও শারীরিক অবস্থা ও পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে দ্বিতীয় শ্রেণীতেই শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হয়।

বিজ্ঞাপন

পরে জড়িয়ে পড়েন ভিক্ষাবৃত্তিতে। তবে ২০ বছর বয়সে বিয়ে করেন রোখসানা বেগমকে। দাম্পত্য জীবনে তাসলিমা খাতুন (৪) ও আব্দুল আহাদ খাঁনের (৭) পিতা তিনি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/15/1552642568447.jpg

আরও জানা গেছে, ভিক্ষা করে অতিকষ্টে সংসার চললেও আত্মতুষ্টি ছিল না ডিপটি খাঁনের মনে। এক পর্যায়ে অপরাধবোধ থেকে ভাতগ্রামের পঁচার বাজারে একটি ছোট দোকান দেন তিনি।

জীবনযুদ্ধে হার না মানতেই ডিপটি খাঁন ভিক্ষা ছেড়ে ব্যবসায় নেমেছেন। এসকেএস এনজিও থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে গত মাস থেকে ঐ দোকানটি চালাচ্ছেন তিনি।

ডিপটি খাঁন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রতিবন্ধী হয়েছি- তাতে কী? মানুষের কাছে আর হাত পাততে চাই না। তাই ভিক্ষাবৃত্তি বাদ দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। দোকান থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ টাকা লাভ হয়। সেটা দিয়েই চলে আমার পরিবারের খরচ।’

তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবন্ধী ভাতাসহ সরকারি কোনো সহযোগিতা পাই না। তবে একটু বেশি বিনিয়োগ করা গেলে দরিদ্রতা ঘোচানো সম্ভব হবে। এজন্য সমাজসেবা অফিস থেকে কিছু ঋণ পেলে ব্যবসাটা বাড়ানো সম্ভব।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/15/1552642593985.jpg

ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম রেজানুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে সাদুল্লাপুর সমাজসেবা অফিসের সুপারভাইজার পলাশ মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘ঋণ নিতে ডিপটি খাঁন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তার জন্য কিছু করার চেষ্টা করছি। দেখা যাক কী হয়।’