লালমনিরহাটের বিমান মেরামত কারখানাসহ বিমানবন্দর চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীর তৈরির কাজ শুরু হবে।
বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাটের বিমান বন্দর পরিদর্শন শেষে বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ।
জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পরিত্যক্ত দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম লালমনিরহাট বিমানবন্দরে বিমান কারখানা করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার ঘোষণাকে বাস্তবে রূপ দিতে দুই দিন ধরে বিমান বাহিনীর প্রকৌশলীরা বন্দরের বিভিন্ন বিষয় খুটে খুটে দেখেন এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করেন। এরই অংশ হিসেবে বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য একটি হেলিকপ্টারে লালমনিরহাট বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। বিমান বাহিনীর প্রকৌশলীদের সাথে নিয়ে বিমান বাহিনীর প্রধান হেলিকপ্টারে পুরো বিমানবন্দর ঘুরে দেখেন এবং এর সম্ভাব্যতা যাচাই করেন।
এরপর সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও সিভিল প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বিমানবন্দরে সভা করেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে পরিত্যক্ত বিমানবন্দরটি প্রথম দিকে বিমান কারখানা হিসেবে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কারখানা হলেই যাত্রী পরিবহনের সেবা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রাইভেট এয়ার লাইনসগুলো চাইলে এখানেই উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারে। প্রয়োজন শুধু সীমানা প্রাচীর। এ জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। আর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় যাত্রী পরিবহনে সংকট হবে না বলেও সভায় জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, সীমানা প্রাচীরে বিমানবন্দরে জমি ব্যবহারকারী কৃষকদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। সে বিষয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে তাদের খুশি করে সীমানা প্রাচীর তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কারখানা হলেই এখান থেকে যাত্রী সেবাও নিশ্চিত করা যাবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে এ বিমানবন্দরটির সম্ভাব্যতা যাচাই করতে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দিনভর যশোর বিমান বাহিনীর একটি প্রকৌশলী টিম দুই বিমান সফল ভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করেন। তাদের সাফল্যের পর এ বৈঠক থেকে বিমান কারখানা ও যাত্রী সেবা দিতে এ বিমানবন্দর চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়।
বুধবার বেলা ১২টার দিকে একটি হেলিকপ্টারে লালমনিরহাট বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। এরপর বিমানবন্দর পরিদর্শন ও সভা শেষে একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের উড্ডয়ন করে ঢাকার উদ্দেশ্যে লালমনিরহাট ত্যাগ করেন তিনি।