স্বাবলম্বী হয়ে দেশের সেবা করতে চান প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শারীরিক প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর / ছবি: বার্তা২৪

শারীরিক প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর / ছবি: বার্তা২৪

গাইবান্ধার ধাপেরহাট শাহ আজগর আলী ডিগ্রি কলেজের একাদ্বশ শ্রেণির ছাত্র জাহাঙ্গীর আলম। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। কিন্তু অত্যন্ত উদ্যমী ও পরিশ্রমী। তার ইচ্ছা লেখাপড়া শেষ করে স্বাবলম্বী হয়ে দেশের সেবা করা। কিন্তু পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্রতা।

জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের বাতাস আলীর ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম দ্বিতীয়। তিনি ২০১৫ সালে জেএসসি ও ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। কিন্তু অর্থাভাবে গত মাসে টিসি নিয়ে তাকে ধাপেরহাট শাহ আজগর আলী ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হতে হয়। কিন্তু টাকার অভাবে পায়ে হেঁটে কলেজে যাওয়া তার জন্য কষ্টকর। তার পরিবারের পক্ষেও কলেজে যাওয়া-আসার ভাড়া বহন করা করা সম্ভব না। কিন্তু জাহাঙ্গীরের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ দেখে সহপাঠীরা বাইসাইকেলে কলেজে আনা-নেওয়া করেন।

বিজ্ঞাপন

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীর। শিক্ষাজীবনে কখনো হার মানেননি। তিনি মা-বাবার প্রেরণায় ও অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাধা পেরিয়ে এতদূর এসেছেন। তবে এখনো তাকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয় না।

জাহাঙ্গীর আলমের সহপাঠী শাহিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর অত্যন্ত মেধাবী ও সরল মনের। সে কখনো ভেঙে পড়ে না। ধৈর্য্য ধরে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।’

জাহাঙ্গীর আলমের মা আনোয়ারা বেগম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবন্ধী ভাতার আবেদন করেছি। কিন্তু আজও সেটা হয়নি। আমরা গরীব, আমাদের কথার কেউ গুরুত্ব দেয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার অনেকেই মাঝে মাঝে সহযোগিতা করেন। তবে ছেলের পড়ালেখার জন্য এবং তার স্বপ্ন পূরণ করতে আমি এতোদিন মানুষের বাড়িতে কাজ করেছি। কিন্তু এখন অন্যের বাড়ি কাজ করে তার পড়ালেখার খরচ চালানো সম্ভব নয়। তাই প্রতিবন্ধী ছেলের স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

জাহাঙ্গীর আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ভ্যানচালক বাবার পক্ষে পরিবারের খরচ চালানোর পর আমার পড়ালেখার খরচ মেটানো সম্ভব না। তাই আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।’

ফরিদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুর আজম মণ্ডল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলমকে এতদিন প্রতিবন্ধী ভাতা দিতে না পারলেও এবার দেওয়া হবে।’

ধাপেরহাট শাহ আজগর আলী ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ আলেক উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম নিয়মিত ক্লাস করে। পড়াশুনায় যথেষ্ট আগ্রহ আছে তার। তাকে আরও উৎসাহিত করতে কলেজের ফি মওকুফ করা হবে।’