ফেসবুকের কল্যাণে সোনালী হাসপাতালে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফরিদপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৭ বছর বয়সী সোনালী, ছবি: বার্তা২৪

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৭ বছর বয়সী সোনালী, ছবি: বার্তা২৪

একটি সড়ক দুর্ঘটনা। তছনছ করে দিয়ে গেছে সোনালীর পরিবারকে। আর দারিদ্রতা বিষিয়ে তুলেছে শিশুটির জীবন। পায়ে পচন ধরেছে। মারাত্মক যন্ত্রণা নিয়ে চিকিৎসার অভাবে দিন কাটছিল তার।

বলছি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামালখালী ইউনিয়নের মছলন্দপুর গ্রামের আছাদ আর্জিনা দম্পত্তির বড় মেয়ে সোনালী র কথা। দুই বোনের মধ্যে সোনালী বড়।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত বছর ২৬ আগস্ট মামা বাড়ি বেড়াতে গিয়ে একটি নছিমনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় ৭ বছর বয়সী সোনালী । দুর্ঘটনায় তার ডান পা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওই সময় তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অর্থভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে সোনালীকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।

সোনালীকে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরে আনতে না পেরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে সোনালীর চিকিৎসা করান। কিন্তু আস্তে আস্তে শিশুটি সুস্থ না হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দরিদ্র পিতা অনেক চেষ্টা করেও অর্থ জোগাড় করতে না পারায় সোনালীর পায়ের ক্ষতস্থানে ফুলে যায় এবং একপর্যায়ে চলাফেরা বন্ধ হয়ে যায়। সোনালী কামারখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। দুর্ঘটনার পর আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/16/1550326944921.JPG

গত ১৪ ডিসেম্বর স্থানীয় দিদার নামের এক সরকারি চাকরিজীবী ছুটিতে বাড়িতে এসে সোনালীর পায়ের দুরবস্থার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে। তারপর একের পর এক শেয়ারে তা ছড়িয়ে পরে। একপর্যায়ে নজরে আসে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়ার। তার নির্দেশে আজ শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সোনালীকে ভর্তি করা হয়। সোনালী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার সঙ্গে এসেছেন তার দাদী রুপসী বেগম ও চাচা শহিদুল।

তারা জানান, সোনালীর বাবাও মানসিকভাবে অসুস্থ। দরিদ্রতার কারণে চিকিৎসা করার হাল ছেড়ে দিয়েছে। তাই তারা সঙ্গেও আসেনি। আপনাদের উপর ভরসা করে নিয়ে এসেছি দয়া করে ওকে বাঁচান।

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অনাদী রঞ্জন মন্ডল জানিয়েছেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। সময় মতো চিকিৎসা পেলে হয়তো এই অবস্থা হতো না। ওর জন্য রোববার একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হবে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, অসহায়দের পাশে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সব সময় আছে। অর্থাভাবে একটি শিশুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। তাই সোনালীর দূরাবস্থার কথা জেনে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। তার জন্য উন্নত চিকিৎসার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।