শেখ হাসিনা সেতুতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

  • নিয়াজ আহমেদ শিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু, ছবি: বার্তা২৪

গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু, ছবি: বার্তা২৪

প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার থ্রি-হুইলার ও ইজি-বাইক কাকিনা-মহিপুর সড়ক দিয়ে চলাচল করে। সদ্য নির্মিত দ্বিতীয় তিস্তায় গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুতে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছেন থ্রি-হুইলার ও অটোচালকরা।

জানাগেছে, ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু তৈরিতে রয়েছে ১৬টি পিলার, ২টি এপার্টমেন্ট, ১৭টি স্প্যান, ৮৫টি গার্ডার। এই সেতুটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। যার নাম রাখা হয় ‘গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতু’।

বিজ্ঞাপন

তবে এখানে এক শ্রেণির শ্রমিক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে প্রতি অটো রিক্সা ও থ্রি-হুইলারে ১০/২০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদা না দিলে গাড়ির চাবি বা ব্যবহৃত মোবাইল নেয়া হচ্ছে বলে চালকদের অভিযোগ। চাঁদা আদায় নিয়েও মারামারির ঘটনা ঘটছে চালকদের সাথে। অসংখ্য চালকদের প্রতিনিয়ত অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/25/1548392058004.gif

অভিযোগে জানা গেছে, এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা অটোরিকশায় করে রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়ার জন্য আসা যাওয়া করে। রোগীরাও অটোরিকশায় যাতায়ত করছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফলে এ সড়কে থ্রি-হুইলার ও অটোরিকশার চাপ বেড়ে গেছে। এই সুযোগে চালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে একটি চক্র।

মহিপুর কাকিনা সড়কের চেন মাষ্টার দাবি করেন, আরিফ নামের এক যুবক ভোর থেকে রাত অবধি চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদার এ অর্থ ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও পুলিশের পকেটে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে প্রকাশ্য চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলেও নীরব রয়েছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন চালকরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/25/1548392080008.gif

সাংসদ মসিউর রহমান রাঙ্গার অনুসারী দাবি করে চেন-মাষ্টার খ্যাত আরিফ বলেন, 'চালকদের কাছ থেকে আদায় করার টাকা নিজের মজুরি হিসেবে দৈনিক চারশত টাকা রেখে বাকি টাকা মসজিদ, মাদরাসায় দান করা হয়। এর বিনিময়ে এ রুটের অটোচালক চেন নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার সেবা দেয়া হয়।'

এ রুটের অটোচালক সাব্বির হাসান লাভলু বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী জনগণের সুবিধার জন্য সেতু নির্মাণ করেছেন। সেখানে চাঁদা না দিলে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হয়। মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়াসহ মারপিটের শিকার হতে হয়। চাঁদার টাকা পুলিশও পায়, তাই অভিযোগ দিয়ে কোন কাজ হয় না।'

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/25/1548392097028.gif

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আলামিনসহ অনেকেই জানান, প্রকাশ্যে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। চাঁদা না দিলে যাত্রীদের পায়ে হেঁটে সেতু পারাপার করতে হচ্ছে। এ পরিবহন নৈরাজ্য নিরসনে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তারা। এ জনদুর্ভোগ লাঘবে পুলিশ প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি।

জানতে চাইলে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, 'গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুটি কালীগঞ্জ থানার এলাকা নয়।'

তবে রংপুরের গঙ্গাচড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে সেতুর দুই পাড়ের শ্রমিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে এই ৭দিনের জন্য এই চাঁদা আদায় করছেন হয়তো। এরপর এ নৈরাজ্য বন্ধ হয়ে সেতু পারাপার স্বাভাবিক হবে।'