হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা, তাই ফুল ফিরিয়ে দিলেন সাংসদ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মেহেরপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল। তবে এখানে শুধু নেই শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয়। এক্স-রে মেশিন থাকলেও তা ব্যবহার করা হয় না, জেনারেটর থাকলেও আলো নেই, অপারেশন থিয়েটার থাকলেও ডাক্তার নেই, ওষুধ বিতরণে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দিকে।

সরকার প্রদত্ত সেবা না পেয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্থানীয় নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। এতো সমস্যা জিইয়ে রেখে কেন সংবর্ধনা- প্রশ্ন রাখলেন স্থানীয় সাংসদ। ফিরিয়ে দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে দেয়া ফুলেল শুভেচ্ছা। সাফ জানিয়ে দিলেন- আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যাগুলোর সমাধানের অগ্রগতি হলেই শুভেচ্ছার ফুল গ্রহণ করবেন তিনি। নতুবা দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নেয়া হবে যথাযথ ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথা গাংনী হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শুভেচ্ছার ফুল ফেরত দেন সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন।

এদিকে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকনের এমন সিদ্ধান্তে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। ইতিবাচক এই উদ্যোগে হাসপাতালের পরিবেশ জনবান্ধব হয়ে গড়ে উঠবে বলে আশায় বুক বেঁধেছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, আজ মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষ্ণুপদ পাল, গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার, পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র নবীরুদ্দিনসহ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা পরিদর্শন করেন নব নির্বাচিত সাংসদ সাহিদুজ্জামান খোকন। এ সময় তিনি রোগীদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসার খোঁজ নেন। পরে হাসপাতাল কনফারেন্স রুমে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

মতবিনিময় সভায় সাহিদুজ্জামান খোকন হাসপাতালে কর্মরতদের উদ্দেশে বলেন, ‘সরকার হাসপাতালের উন্নয়নে আমাদের ওপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা রোগীদের সেবা করার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ যারা স্থানীয় লোকজন এখানে কর্মরত আছেন তাদের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। কেউ যদি দায়িত্ব অবহেলা করেন তাহলে তাকে ক্ষমা করা হবে না। হয় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন, নয়তো নিজ দায়িত্বে জায়গা ছেড়ে দেবেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধানে কোনো অগ্রগতি না হলে আপনাদেরকে জবাবদিহিতা দিতে হবে।’

স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার দলেরও কেউ যদি হাসপাতালের কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকেন তাকেও ছাড় দেয়া হবে না। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়েই তাদের কাছ থেকে সেবা আদায় করে নিতে চাই।’

মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন মতবিনিময় সভায় বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। এই হাসপাতালে পাহাড় সমান সমস্যা রয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এ সমস্যাগুলো সমাধানে আমার যা যা করণীয় তাই করব।’

অনুষ্ঠানে হাসপাতালের সমস্যাগুলো তুলে ধরে তা সমাধানের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।