২ দফা দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
জুলাইয়ের আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও জড়িতদের বিচার এবং অবিলম্বে জাকসু কার্যকরের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন তিনি।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০ ব্যাচের (২০২০-২১ সেশন) শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ছিলেন।
জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, জুলাই গণঅভ্যূত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলাকালে হামলা করা হয়, হামলাকারীদের গ্রেফতার বা বিচারের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত সেপ্টেম্বর মাসে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, এবং তাদের ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। আজকে ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও তারা কোন রিপোর্ট দিতে পারেনি এবং মামলা গ্রহণের কোন প্রস্তুতি নিতে পারেনি। আমি এই ব্যাপারে হতাশ এবং এরই প্রেক্ষিতে দুই দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছি।
তিনি আরও বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে, আমাকে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিচার কার্য নিয়ে আন্দোলনে সরব হওয়ার জন্য আমাকে সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এক মুখোশধারী ব্যক্তি পালিয়ে যায়। তার প্রেক্ষিতে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করি, তারা একটি জিডি করে। কিন্তু এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কাউকে শনাক্ত করা বা ধরার ব্যাপারে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই আমি মনে করি যে আমাদের নিরাপত্তা আজ হুমকির পথে। আমাদের জীবন হুমকির মুখে। যেকোন সময় আমাদের ওপর আঘাত আসতে পারে। আমার দাবি হচ্ছে, আজকের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদান করে মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি নিবে, এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মামলা করার জন্য একটা কমিটি গঠন করবেন। এই লিখিত আশ্বাস দিলে তবেই আমি অনশন থেকে সরে দাঁড়াবো।
অবিলম্বে জাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের ৯ দফার সাত নম্বর দফা ছিল যে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ কার্যকর করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত ছাত্র সংসদ জাকসু কার্যকর করার জন্য কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। তারা বারবার দফায় দফায় মিটিং করেছে, আশ্বাস দিয়েছে। আজকের মধ্যেই জাকসু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন রোডম্যাপ প্রকাশ করবে এবং নির্বাচন কমিশন গঠন করবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ উপস্থিত হয়ে অনশনকারীর সঙ্গে কথা বলেন। প্রথম দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির কাছ থেকে আমরা জেনেছি, আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত এবং ২১ জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় দাবির বিষয়ে তিনি জানান, উপাচার্য মহোদয় আগামীকাল জাকসু নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন।