পোষ্য কোটার হার ‘নামমাত্র পরিবর্তনে’ সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা

  • রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটার ‘নামমাত্র পরিবর্তনে’ সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। আগামী ২ জানুয়ারি ভেতরে পোষ্য কোটা বাতিল না করলে প্রশাসনিক ভবনে অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি সমন্বয়করা।

এদিকে বিগত বছরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৯৬ জন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১০০ জন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ১১৩ জন, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৩৯ জন ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৯৪ জন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে এই কোটার হার ৩ শতাংশ অর্থাৎ ১১৭টি আসন বরাদ্দ আছে। যেখানে কোনো বছরই ১১৭জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি, সেখানে নামমাত্র হার কমিয়ে এই কোটায় আদৌ কোনো প্রভাব পড়ছে না। ফলে পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাদ না দিয়ে প্রতিবছর এক শতাংশ করে কমানো প্রশাসনের 'ধূর্ততা' বলে আখ্যা দিয়েছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন রাবির পাঁচ শিক্ষার্থী। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন তারা। পরবর্তীতে ১৬ নভেম্বর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করেন প্রশাসন।

এরপর ৮ ডিসেম্বর দুপুরে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে 'রেড কার্ড' প্রদশর্ন করেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

পরদিন পোষ্য কোটা নিয়ে উন্মুক্ত বিতর্কের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রতিযোগিতায় কোটার পক্ষে কেউ অংশগ্রহণ না করায় সিনেট ভবনের উত্তর পাশের প্যারিস রোডে পোষ্য কোটার প্রতীকী দাফন করেন তারা। একদিন পর আবারো মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রশাসন থেকে স্পষ্ট কোনো বার্তা পাননি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, বিগত দুই মাস আমরা খুব ছোট ছোট প্রতিবাদ সমাবেশ করেছি। আমরা তাদের ফাইনাল ডিসিশনের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু ফাইনাল না হওয়ার আগেই, ৫ জানুয়ারি তারা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আবেদনের তারিখ ঘোষণা করল। পোষ্য কোটা বাতিলের এখনো তারা কোনো সিন্ধান্ত জানায়নি। এমনকি এখনো পর্যন্ত ফ্যাসিবাদি শিক্ষকদের নিয়োগে কাজ করতেছে। যার জন্য আমরা তিনটি দাবিতে আল্টিমেটাম দিলাম। পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে; ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কার্মচারিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে; এবং বিভিন্ন নিয়োগে কেন ফ্যাসিবাদি চিহ্নিত শিক্ষকদের নিয়োগ দিলো, তার যথাযথ কারণ দেখাতে হবে। না হলে আমরা ২ জানুয়ারি সকাল ১০ টা থেকে প্রশাসন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিব।

এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, আমরা ইতোমধ্যে স্টেকহোল্ডার, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের সাথে মত বিনিময় করেছি। প্রশাসনকে সকলের মতামত নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা ভর্তি পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সচল রেখে এবং সকলের মতামতকে সম্মান দিয়ে একটি মধ্যমপন্থার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি।