খুব খোঁজাটা কেমন খোঁজা

  • তানিম জাবের
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

আমি না থাকলেও

আমি না থাকলেও
আকাশ ভেঙে সন্ধ্যা নেমে
ফাঁক ফোকড়ে বেরিয়ে পড়বে
নক্ষত্র, দূরের মাঠ থেকে
ঘরে ফিরবে উদাসী রাখাল
পিদিমের কেরোসিন ফুরিয়ে
সলতে যাবে জ্বলে জ্বলে
নিভে, আমি না থাকলেও
সেইসব উঠোনে হাঁসেরা ফিরবে
ভেসে যাবে আজানের সুর
মাগরিবে মাগরিবে
হাওয়াই মিঠাইওয়ালা গোধূলি
গুটিয়ে নিয়ে পেরিয়ে যাবে
প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার
লিচুবনে পাতা ঝরে ঝরে
এমন আরো হাজার সন্ধ্যা
যাবে ফুরিয়ে ফুরিয়ে
মরে গেলে—
করতলে থাকবে না শিউলি
একটি অথবা ততোধিক কাঠফুল।

কথার কথা

কিবা করে কেমনে তারে বোঝাই সকল অপারগতা
যখন ভাবি খুব সহজে সোজাই লাগে ভাবের কথা
বলতে গেলে মুখ ফুটে না কথা জোটে না ভাব আসে না
উস্কানো মন উস্কে দিয়ে প্রমাদ গুনে দিন কাটে না
কাটত যদি এক পলকে সবটুকু বোধ আসত বাড়ি
মনের ঘরের খিল লাগিয়ে না দিত আর একলা আড়ি
সব ঠিকঠাক হয় না এমন ভাবছি বসে একলা আমি
তেমন একটা বোধের পাশে ঘুম ভেঙে যায় ধুমসে ঘামি
নাক বরাবর হাঁটতে গিয়ে গাছেরও দেখি বোতল জীবন
পাশ কেটে যাই কী শুনছি ছাই ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে রোদন
স্বপ্ন এমন চৈতালি রোদ ভাঙার আগেই বেসম্ভব বোধ
চুপসে ঢুকে আটকে পরে চাপকে ধরে কি ভীষণ ক্রোধ

বিজ্ঞাপন

শীতকাল

দ্রাবিড় বন ডুবতাছে তোমার নাকের নোলকে
কই তার আওয়াজ আসে!

ভাতঘুমের মতো গভীর আর আরামের
এই বিকাল তবু শেষ হইতেছে
নিশ্বাস টানার মতো সহজাত শব্দে

পৃথিবীর এই দিনগুলা তবু—
হেমন্ত শেষের পাতার মতো উজ্জ্বল লাল কমলা হলুদ,
তবু কী নিদারুণ ঝইরা পড়তেই তার সুখ

আমি তোমার দুঃখ থিকা পাশ ফিরা শুইলে
এলাচের ঝোপ আরো দীর্ঘ হয়
যেন সব সম্ভাবনার গোরে কেউ ধূপগাছের চারা লাগাইল

সব শরীর মনরে ঘুম পাড়ায়ে রাখে
কোনো এক বিষণ্ণ শীতের প্রথম সকাল পর্যন্ত

লিখতে গিয়া দেখি—
—যেন এইসব সবই শীত আসার পূর্ব প্রস্তুতি, যেমন সবার ভেতরে হেমন্ত ঘুম পাড়ে শীতের সকাল দুপুর ঠান্ডা রাত অবদি।

সন্ধ্যা নামলে

শাপলার ভ্যাট তুলে
ফিরছে ঘরে কিশোরের দঙ্গল
অতীতাতীত ছায়ায় ঘনীভূত সময়, শরীরী
অবয়ব গুনছে পাতার ভ্রুন
মিহি কণা ভাসছে বাতাসে, জোর ঝড়ের শব্দ
তাড়িয়ে নিয়ে আসছে যাবতীয় বৃষ্টির ফিটাসের কান্না
অগণিতই হবে—তা ই কি হবে নাকি? তা না হলে ঐ
নক্ষত্র পতনের শব্দ শুনে শুনে কারা
ঘুমায় ঐ লোহিত লবণ শৈশবে—!
কারা ঘুমায় বুকের পাঁজরে—সন্ধ্যা নামলে।

একাই একা

উড়ার ডানা কে দিল তারে ঘুরছে অতল ভেতর বাহির
শূন্য যেন নেই কিছু নেই বোধের মতন করছে জাহির

সহসা যে থামবে না সে-নিশ্চয়তা কেউ দেবে না
তবু সে তার উড়ার গোপন নথির কথা কেউ জানে না

দ্রুম অতলে যাই সকলে শেষ বিকেলের ক্ষীণ আলোকে
তবুও তার অসম্ভবের রেলগাড়িটার পথ মেলে না

পথটা এমন মতের মতন ভিন্ন জনের ভিন্ন রেখা
পথের মাঝেই পথ হারালো খুব খুঁজলে মিলবে দেখা

খুব খোঁজাটা কেমন খোঁজা ইশ যদি তা জানা যেত
খুঁজেই যেতাম যতক্ষণ না সেই পথটা দেখা দিত

দেখছি তবু বিভিন্নদের ভিন্ন পথের মতের দেখা
সবার পথের রেখার বাইরে আমার পথে আমিই একা

আমার পথে একাই আমি এমন তো না আমিই শুধু
সবাই সবার জীবন জুড়ে একাই একা এমন ধূ ধূ।