আয়শা

  • আহমেদ স্বপন মাহমুদ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

১.

পাখি যাও। সোনার পালংক ছেড়ে।
নদীর দীর্ঘশ্বাসের
ওপারে
অনাদরে
আদরে
বলো তারে কিছু না
বলো না ভুলে যেন না
আমার অসহায়
অন্তর
মন্থর কাঁপে
আঁকা পাখি চিত্রমাত্র তুমি।
মায়ার রুমালে। দরদে। মরদের।
চুমুর চঞ্চু কাছাকাছি।
মিলিবার।
যেন আমাদের কতবার
হয়েছিল মিল
মিলন, অমিল
সলিলে না যায় মোছা
দাগ
নিদাঘ
তোমার নাক বোঁচা
উঁচা উচা স্তন
মনোহর
মন হরণ
আলো ও বর্তিকা
রণ
আলোড়ণ তুলেছিল
মন দেহে
পাতায় ও গাছে
পাখি তুমি পাছে
ওই গাছে বসে
শোনো যদি ডাক
নির্বাক
সন দেহে
কৃষি খামার থেকে
অনতিদূর
অতিথপুর পার হয়ে
থেমে যায়
বারেক ফিরিয়া আঁখি চায়
পুনরায়
মিলিবার
মিলিত শুক্রবার মনে আছে
শনিবারের আগে
বসন্তে
কোকিলায়
ডেকেছিল
তোমারে চেয়েছিল
মন
গোপন
অকারণ
শনিতে
শোণিতে
যাও পাখি
বলো না তারে
যেতে ভুলে
আমারে
আমার দায় তার
অবসাদ
বিষাদ
হাহাকার
কিছুটা থাকুক
না দায় মুক্তি হোক।
পাখি তুমি চিত্রমাত্র
আঁকা
রাগে
অনুরাগে
হাসি ঠোঁট
বাঁকা।
সোনার পালংক ছেড়ে
উড়ে উড়ে পাখি যাও
বলো না তারে
যেন না মনে লয়
আলয়
আলোয়
আমারে। তোমারে।

২.

কাছে বসিয়া থাকো না
তোমাকে বিনা
না মন বসে।
বেঘোর চোরা মন
অধরা
সুদিন আসিবে
তোমাকে নিয়ে
আষাঢ়ে
নায়রে যাই
নাই
নায় নায়রে
মায়া বাড়ে
পাড়ে
পড়ে থাকে
কত মুখ
অসুখ
আর কলিজায়
বিঁধে যায়
কষ্টের তীর
আমার দুর্গতির দূর গতি নাই
তুমি নাই
বিনা তুমি
মানে মন না
সকল ঋণ না
শুধিতে হবে
সকল কান না
ফিসফিসে
আশেপাশে
রটে কত ঘটনা
রসময় রটনা
যারা ভালোবাসে
কাছে বসিয়া থাক
না মন মানে না
উনুনে রান না হয়
অত্যল্প আগুনে
তেলেবেগুনে জ্বলে
শুনে কান না
এত এত রটনা
রসময় ঘটনা
হোক
মনের অসুখ
সারুক
কাছে বসিয়া থাক
না

বিজ্ঞাপন

৩.

তিনি এলেন
দেখা হলেন
না।
তা না না তানানা।
বানানা খেতে ভালো
আমাদের কালো কালো মুখে
আলোর উচ্ছ্বাস
ভালো!
তার মুখে কালো কালো তিলক।
ক্ষেতে আরো কত শস্যের ঝলক।
হোক বা না হোক দেখা
সে কী আর অদেখা
আমার।
হেরপর যার তার কায়া
কার কীবা আসে যায়!
সোম কেবলি মঙ্গলে ধায়
ও রাধা
আমাদের চুম্বন মানা
আমাদের ঠোঁট বাঁধা।
আর যার নাই কোনো সুখ
আমার দায়
মায়ার অসুখ
হোক বা না হোক মিল
তার তিল না
মনের মিল না
হলো না লো সই
তোমার অথৈ বুকে খরা
জরাজীর্ণ মরা মরা ঘ্রাণ
ও পরান ও পরান
কান না শুনে
যান না
তিনি এলেন
দেখা হলেন
না।

৪.

কই থিকা কই যাও
উইড়া উইড়া যাও ওগো পাখনা
থাক না পইড়া মায়াবিল
দরদ-সুর আর পিরিতপুর
তোমার ছায়ার পিছনে
না সামনে যাইতে হইবে,
না যাও তাড়াতাড়ি
না দুপুর গড়ায়া যায়
না বিকাল আসিয়া হুমড়ি খাইয়া পড়ে
তোমার ওপরে
যাও সকলি ছাড়ি
না কই যাও জাদুপাখি
আঁখি থিকা জল ঝরে কেন্?
আমেন, আমেন।

৫.

যথাতথা
না দিও মন
নিও দেখে সে
মোটা না চিকন
গুণিয়াও হতে পারে নিতে
গুলশান বা বনানীতে
যারা ভাব করে
ভাবায় যাদের
তাদের
নিও চিনে
শর্করা বেশি হলে
বিনা চিনি খেয়ে নিও চা
আচমকা হয়ে গেলে
দেখা
অদেখার মতো
অচেনার মতো
নিও ফিরায়ে মুখ
তোমার তলপেটের অসুখ
ছেড়ে গেছে নিশ্চয়
আর অপচয় করেছি যত
দিন
যত সন্ধ্যা ও বিকাল
মহাকাল
ভুলে গেলেও
মনে নিও তুমি
সুকোমল
মুডে
নিউ বেইলি রোডে
বারো তলায়
অবেলায়
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
দুহাত বাড়িয়ে
খুঁজে নিও
সুহালে মন
অকারণ মন খারাপ না করে
যথা অযথা
না চেয়ে কোনো দিক
ফিকফিকে
সকালে
হেসে নিও
কতদিন হাসে না একচোখা বক।

৬.

আমার আত্মহত্যার পেছনে তোমার কোনো হাত নেই।
না টিয়া ও বুলবুলির ফিসফিসানি
না বকুল ও শীতকাল।
কদিন আগে যে মেয়েটি মরে গেল নিজে
তার কোনো অপরাধ ছিল না।
না বাতাস ও মাটির ঘ্রাণ।
অফুরান শক্তি নিয়ে জন্মেছে মানুষ।
টিকটিকি দেখছে না।
না জানছে কিছু
ঘাসের শিশির।
না আমার মৃত্যুর পক্ষে তুমি নিরপেক্ষ নও।

৭.

তোমার কোনো স্বাধীন ইচ্ছা নাই।
আমি বিধি ও প্রকৃতি। তোমাকে চালাই।
বামে। ডানে। ডানে ও বামে
কোনো নির্ধারিত স্থান তোমার নাই।
ঘাড়ে ও গর্দানে মুনকির নেকির
তারা না হয় তোমার বোন ও ভাই!
তারা নাকি নূরের তৈয়ার কেবলি ফেরেস্তাই!
তোমোকে যেহেতু পাই
রোদ্রে ও ঘ্রাণে
শীতে ও গ্রীষ্মে
মাংসের দোকানে
শরৎ ও হেমন্তে
আমাদের ঋতুগুলো
অনিয়মিত স্রাবের মতো
স্থির রয়, অস্থিরও হয়
যত ভুল ততটা মধুর পিরিতি
রীতিনীতি ঠিক রেখে যদি পারো
চালাও তবে সাধের নাটাই।
আর দেখো ওই অদৃশ্য হাত
তুমিও যে কুপোকাত কে জানে
নাই তার মানে যদিও
আমার নাম যদি মনে লয় নিও
রুমালে অন্তত।
আমাদের যত মনভারী গান
অনন্তর জ্বলে ওঠে
তাতেও কিনা বিষবাষ্প ফোটে
তোমার ইচ্ছার হিতে বিপরীতে।
কী বলিব লিখেছে রুমালে যে
আপন দরদে
মায়ায়
এখনো সে জানে
পেয়েছে রুমাল লিখা
ভুলো না আমায়।

৮.

দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতা জানি না।
না তোমাকে। মাপতে জানি।
ভাবতে ভাবতে তাই খেয়ে
ঘুমিয়ে পড়ব।
ঘুম না এলে তোমাকে ভাবব।
ভাবতে ভাবতে বর্ষা ও কদমের কথা
মনে পড়বে। তোমার খোঁপায়
কদম দেখতে সুন্দর।
খয়েরি লিপস্টিকের মতো।
কতবার লিপস্টিক খেয়েছি!
তবুও ঠোঁট খাওয়া হয়নি।
কেবল চুমুর স্মৃতি মনে আছে
গাছের। আমরা হেলান দিয়ে
জড়িয়ে ছিলাম
বৃষ্টি ও সম্ভাবনাময়
সন্ধ্যায়।
সন্ধ্যায় চাপরাশিদের অত্যাচার বেড়ে যায়
খামোখা এসে জ্বালাতন করে
প্রেম একরাশি জ্বালাতনের মতো
এলিয়ে পড়া শুক্রবারের চুলের মতো
অসহায়
সন্ধ্যার মতো
আমাদের হারিয়ে যাওয়া অন্ধকারের
মায়ার মতো
তোমাকে ভাবব না
না ঘুমানোর আগে
না স্বপ্নে
তোমাকে দেখে বলতে পারি
নি কিছুই
ইতস্তত বিকেলের মতো
ঠোঁটে জড়তা এসে ভর করে
আমাদের চুমুগুলো চিরকাল
পরস্পর নিকট দূরত্বে এসে
আটকে থাকে।
খাঁচায় পুরে রাখা বাঘের মতো
শিকল ছিঁড়ে সে কোনোদিনও বেরোতে পারে
না।
তুমি বন্দিজীবনেও ভালো আছো
কিনা
জানতে চাই না আর
তোমার পৃথিবী না তোমার
না
আমার কোনোদিন হবে।

৯.

না ঘুমাও নি
না কোনো এক রাত
আমার পঙক্তির জন্য
একটি পঙক্তির জন্য
আমি না নিভিয়ে দিয়েছি
কত কত রাত না
তুমি না কাটিয়েছো
মুহূর্তমাত্র
তুমি কোনোদিন পঙক্তি হতে পারো
নি।

১০.

না, আমি না
বলি না, নাই আমেন
আঙুলের রেখায় দেখি
চারপাশে শত্রু মোতায়েন।
পানীয়ের সাথে
সাঁই করে গলার ভেতর
উড়ে যাচ্ছে
আস্ত একটা আয়শা…
ডুবে যাচ্ছে
৩৩০ এয়ারবাস...