আমার শাশ্বত প্রেম তোমার জড়তা ঘোচাবেই

  • ফিরোজ এহতেশাম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

অলঙ্করণ কাব্য কারিম

অহল্যা

তোমাকে দেখেছিলাম জগতের বিপনীবিতানে
সেই রূপ! আমি মুগ্ধ, সচকিত, তুমি নির্বিকার।
তবু ঘুরে ফিরে আমি তোমার কাছেই চলে আসি
কিছুই বলো না তুমি, হাত ছুঁই গোপনে তোমার।

লোক সমাগম ভুলে, আমি চেয়ে থাকি তোমা পানে
তোমার উজ্জ্বল চোখ, নীল ঠোঁটে মৃদুমন্দ হাসি
বাকরুদ্ধ হয়ে আছো বিগত জন্মের অভিমানে
হে নিশ্চলা, স্থবিরতা, তোমাকে এখনো ভালোবাসি।

বিজ্ঞাপন

লোকে বলে জড়বস্তু, লোকে বলে তুমি ম্যানিকিন
তাদের অজ্ঞতা আমি নিজগুণে ক্ষমা করে দেই
কবে তুমি সাড়া দিবে, অপেক্ষায় আছি বহুদিন
আমার শাশ্বত প্রেম তোমার জড়তা ঘোচাবেই

একদিন হঠাৎ উপেক্ষা করে সকল ভ্রুকুটি
পলক ফেলবে তুমি, অবনত চক্ষু ছলোছলো
নিজেকে জাগিয়ে তুলে, নিশ্চলতা থেকে নিয়ে ছুটি
চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রেখে বলবে তুমি, চলো।

দৃষ্টিকোণ

একদিকে জানালা দিয়ে সংসার দেখা যায়
অন্যদিকে, ছাতিম গাছের নিচে প্রশ্নবোধকের মতো
ফণা তুলে বসে আছে সাপ, আত্মবিশ্বাসসহ।
এটা কি শুধু-শুধুই, অর্থহীন? না।
নানান অর্থ তুমি আরোপ করতে পারো এমনই সময়
মোবাইলে কল দিল ডাকু রাণী।
আমার কী কী দেওয়ার আছে
কী কী আমি ছাড়তেই চাই না,
সব খুলে বলতে বলল আমাকে

আমি বললাম, তোমার তীব্র আগ্রাসনের সামনে সে যে
সামান্য চ্যালেঞ্জ হয়ে ফুটে আছে, তাতে তো তোমার
দার্শনিকভাবে মুগ্ধ হওয়ার কথা,
অথচ তুমি কেন রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে
একটি ফুলের দিকে তাকিয়ে রয়েছো,
মরুভূমি?

রাতে

‘এখানে দাঁড়ানো নিষেধ। দাঁড়ালেই দণ্ড।’
এই নিষেধাজ্ঞাকে হেডলাইট দেখিয়ে
দণ্ডিত হয়ে আছে বাসগুলা।
রাতে, একটু দূরে এক অকেজো রে-কার,
তাকে দণ্ডযোগে টেনে নিয়ে যাচ্ছে একটা ‘মহিলা বাস’
সংস্কার বা গন্তব্যের দিকে।

অর্থহীন যত ঘূণির্পাক

সহ্য করি আমি আত্মপ্রকাশের
তীব্রতর বোবা আর্তনাদ...
এমন বেদনার অর্থ নাই?

যে রূপ নিতে নিতে অরূপ হয়ে যাও
সে রূপ প্রকাশের ব্যঞ্জনা
ভাষার পরিধিতে আটছে না

কাঠামো ভেঙে পড়ে ভিত্তি ধসে যায়
সংজ্ঞাতীত কোনো বর্ণনে
সুপ্ত থেকে যাওয়া বর্ণতে

জোড়া ও তালি দিয়ে বাতাস বয়ে আসে
দেহের চারপাশে উন্মাতাল
অর্থহীন যত ঘূণির্পাক

যজ্ঞডুমুরের গাছ ও কাকাতুয়া

ধরো, কেউ একজন মুখোশ পরে এসে বলতেছে—
আমাকে চিনলেন না! আমি আমজাদের জ্যাঠাত ভাই
ওই যে, আমাদের বাড়ির পুকুর পাড়ে একটা যজ্ঞডুমুরের গাছ ছিল
যার সারা শরীরজুড়ে জোনাক জ্বলত রাত্রিবেলা
মনে পড়ে, নাকি মনেই পড়ে না কিছু...

তবে কি আমি তাকে তোমার কাকাতুয়ার গল্পটা বলব
যার পায়ে ছিল একটা রূপার রিং
উড়ে এসেছিল হঠাৎ একদিন তোমার বাগানে
যে শুধু এক অপরিচিতের নাম বলতে পারত?

তীর ছোড়ো আসমানে

শপাং শপ মার চাবুক ছাল উঠুক সাব অলটার্ন
উন্মাতাল রক্ত আজ টগবগায় বিষোদ্গার

দিচ্ছে ডাক একতারায় বাউল গান লাল সালাম
বাঁক নিল ভিন গাঁয়ে রং মিছিল তার তরে

এই পোলা ওই মাগীর নাম কিরে ধাম কোথা
উদাস মন মাদারচোদ মর গিয়া সাতমাথায়

হাত মারো ধুন্ধুমার ভয়ংকর সুন্দরের
বেকার লোক বিষুদবার তীর ছোড়ো আসমানে

কোথায় কোন তাল উঠে লাফ দিয়া যান চলে
টালমাটাল এই সময় হাঁক দিল কোন তালে

উন্মাদের রক্তবীজ চারদিকে চারধারে
খুন নিজেই ডাকছে ওই শান দেওয়া তরবারে