মোংলায় নানা আয়োজনে কবি রুদ্রের জন্মদিন পালন
মোংলায় প্রয়াত কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্'র ৬৫ তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে।
এ উপলক্ষে শনিবার সকাল ৯টা রুদ্র স্মৃতি সংসদ'র আয়োজনে মিঠাখালী বাজার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে কবির মাঝে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে রুদ্র স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে কবির কবরে পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি, রুদ্রের অনুজ ও সাংবাদিক সুমেল সারাফাত, মিঠাখালী ইউনিয়নের নবম নির্বাচিত চেয়ারম্যান উৎপল কুমার মন্ডল, সাবেক চেয়ারম্যান ও রুদ্র স্মৃতি সংসদের উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি মাহমুদ হাসান ছোট মনি, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নুর আলম শেখ, স্থানীয় ইউপি মেম্বর উকিল উদ্দীন ইজারদারসহ রুদ্র স্মৃতি সংসদ এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দরা।
এছাড়া বিকেলে মিঠেখালী ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। সন্ধ্যায় মোংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে রুদ্র স্মৃতি সংসদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মোংলা শাখা স্মরণ সভার আয়োজন করেছেন। স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা আবৃত্তি ও রুদ্রের গান পরিবেশিত হবে।
১৬ অক্টোবর ’ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের স্রষ্টা, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬৫তম জন্মবার্ষিকী। বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
উল্লেখ্য, অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন- ‘দিন আসবেই- দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্র প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।
মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন।‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।