আ.লীগ নেতার কবল থেকে ১৪ একর জমি উদ্ধার

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ একর সরকরি জায়গা দখল করে রেখেছিলেন জেলা কৃষকলীগ সভাপতি/ছবি: বার্তা২৪.কম

১৪ একর সরকরি জায়গা দখল করে রেখেছিলেন জেলা কৃষকলীগ সভাপতি/ছবি: বার্তা২৪.কম

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগ সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজার দখলে থাকা ১৪ একর সরকারি জায়গা উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বানিয়াচং উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান খান উপস্থিত হয়ে দখলকৃত জায়গায় নির্মিণাধীন বিভিন্ন স্থাপনা বন্ধের নির্দেশনা দেয়াসহ সীমানা চিহ্নিত করে দেন।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলার সুলতানপুর মৌজার ১৪ একর ৪৫ শতক ভূমি ১৯৮৮ সালে ভূমিহীনদের নামে লিজ দেয় উপজেলা ভূমি অফিস। একপর্যায়ে নিরীহ ভূমিহীনদের নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ভূমিসহ কাগজপত্র নিয়ে নেন হুমায়ুন কবীর রেজা। এরপর থেকে ওই জায়গাটি তার দখলে চলে যায়।

এদিকে, গত নভেম্বর মাসে জায়গাটি উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন একই মৌজার কচুয়ারআব্দা গ্রামের জ্যোতিময় দাস। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত করে রেকর্ডপত্রাদির আলোকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গত ৩ ডিসেম্বর ডেপুটি কালেক্টর রেভিনিউ (হবিগঞ্জ) ইয়াছিন আরাফাত রানা বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে চিঠি দেন।

১৯৮৮ সালে ভূমিহীনদের নামে জায়গাটি লিজ দেয়া হয়

বৃহস্পতিবার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান দখলকৃত জায়গায় উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি ৩ দিনের মধ্যে সরকারি ভূমি থেকে সকল স্থাপনা নিজ দায়িত্বে সরানোর জন্যও মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন। অন্যথায় প্রশাসনের উদ্যোগে এসব স্থাপনা সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মতিউর রহমান খান বলেন, ‘বর্তমানে যিনি এই ভূমিতে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন বা নির্মাণ করার চেষ্টা করছেন সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। কারণ সরকার তাকে লিজ দেয়নি। এই খাস ভূমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প বা গুচ্ছ গ্রামের জন্য ওপর মহলে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। বিষয়টি যেহেতু অনেক বড় তাই জেলা প্রশাসকের মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষকলীগের সভাপতি হুমায়ুন কবীর রেজা বলেন, ‘এই জায়গাটি এখনো ভূমিহীনদের নামেই আছে। আমি শুধু জনস্বার্থে এতিমখানা ও মাদ্রাসা করে দিয়েছি। সরকারি কোনো ভূমি আমি দখল করে রাখিনি। আমি শুধু দেখাশুনা করি।’

অভিযোগকারী জ্যোতিময় দাস বলেন, ‘এলাকাবাসীর স্বার্থে জায়গাটি উদ্ধারের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করি। উপজেলা ভূমি কমিশনার ওই জায়গাটি পরিদর্শন করে তিনদিনের ভেতরে স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন খন্দকার বলেন, ‘সরকারি জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে কেউ কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। প্রকৃত লিজধারীরা যদি ভূমিতে কোনো কিছু না করতে আগ্রহ হয়, তাহলে লিজ বাতিল করে দেয়া হবে। আর লিজ হস্তান্তর করার কোনো নিয়ম নেই।’