ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বায়রা লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্মী আনারুল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আনারুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

আনারুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

মেয়াদোত্তীর্ণ পলিসির সঞ্চয় ফেরত না দেয়ায় ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বায়রা লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির কর্মী আনারুল ইসলাম। গ্রাহকদের তাড়া খেয়ে নিজ গ্রামে ঢুকতে পারছেন না তিনি। বারবার কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে ধরণা দিয়েও কোনো সুরাহা করতে পারছেন না।

আনারুল ইসলাম ওই কোম্পানির মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদি ইউনিট ম্যানেজার হিসেবে ২০০৬ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ২০১০ সালে শাখা গুটিয়ে নেয় কোম্পানি। এখন আনারুলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। আর প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করার সুযোগ নেই গ্রাহকদের। ফলে সব দায় আনারুলের উপরে চাপিয়ে তাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগী আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমার অফিসের অধীনে ৬ জন কমিশনভুক্ত বিমা কর্মী ছিলেন। যাদের হাত ধরে এলাকার পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি বিমা পলিসি করেন। যারা কোম্পানির নীতিমালা অনুযায়ী নিয়মিত পলিসি সঞ্চয় করেছেন। অনেকদিন আগেই দুই শতাধিক পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হয়। যথা সময়ে তারা ব্যাংক হিসাব খুলে সঞ্চয় ফেরত পাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। এর মধ্যে ১৪০ জন টাকা পেলেও ৬০ জনের উপরে এখনো টাকা পাননি। ফলে তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে আমার উপরে চড়াও হয়েছে।’

এদিকে টাকা ফেরত পেতে মরিয়া বিমা গ্রাহকরা সাম্প্রতিক সময়ে আনারুল ইসলামের ওপর হামলা চালায়। তবে দৌড়ে পালিয়ে শারীরিক আঘাত থেকে মাফ পেলেও এখন নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তিনি। ফলে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। বর্তমানে গাংনী উপজেলা শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বসবাস করছেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা রয়েছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

আনারুল ইসলাম বলেন, ‘বিমা গ্রাহক করমদি গ্রামের মোশারফ হোসেন, আনিছুর রহমান, সাজু, মোলালেব হোসেনসহ আরও কয়েকজন মিলে আমার জমিতে আবাদ করা বন্ধ করে দিয়েছে। পালিয়ে বাড়ি ছেড়ে আসার সময় দুই বিঘা জমিতে সবজি ছিল। সেগুলো বিক্রি করতে না দেয়ায় নষ্ট হয়েছে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো সুরাহা দিচ্ছে না। এখন উভয় সংকটের মধ্যে পড়ে আমি দিশেহারা। বাড়ি ছেড়ে এভাবে আর কতদিন কাটাব?’

বিজ্ঞাপন

আনারুলের হাত ধরে বিমা পলিসি করা কয়েকজন বলেন, ‘আনারুলকে ছাড়া কোম্পানির কোনো প্রতিনিধি এলাকায় আসে না। আনারুল যেহেতু দায়িত্ব নিয়ে আমাদেরকে পলিসি করিয়েছে, তাই আনারুলকেই টাকা ফেরত দিতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে বায়রা লাইফের আঞ্চলিক পরিচালকদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। অপরদিকে প্রধান কার্যালয়ের টেলিফোন নাম্বারে কল করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি।