সমাপনী পরীক্ষার্থীদের থেকে জোর করে চাঁদা নিয়ে ভূরিভোজ!

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, বরগুনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক লোককে ভূরিভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়

সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক লোককে ভূরিভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়

বরগুনার আমতলী একে হাইস্কুল সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমাপনী পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করে ভূরিভোজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বিদায় সংবর্ধনার নামে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান সিকদারের নেতৃত্বে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হয়। এ নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

আরও জানা গেছে, ওই বিদ্যালয় থেকে এ বছর ১০২ জন পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের বিদায় উপলক্ষে প্রত্যেকের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করা হয়। সে টাকায় ভূরিভোজের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকসহ দুই শতাধিক লোককে ভূরিভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যালয়ের কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোর করে এক হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। অধিকাংশ গরিব পরীক্ষার্থীরা টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছানুযায়ী চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষক এ সিদ্ধান্তে রাজি ছিলেন না।

অভিযোগ আছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান সিকদার ২০০৯ সালে বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে ভূরিভোজের আয়োজন করেন।

এ বিষয়ে আব্দুল মান্নান সিকদার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাই বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন এবং তারাই খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।’

তবে চাঁদা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি।

আমতলী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (সদর ক্লাস্টার) ফাতিমা বেগম বলেন, ‘চাঁদা নেওয়া ও খাবারের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া খুবই অন্যায়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’