শিবচরে ইলিশের হাট, নির্বিকার প্রশাসন

  • মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, মাদারীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নেই প্রশাসনের তদারকি, চলছে ইলিশ বেচা কেনার হাট, ছবি: সংগৃহীত

নেই প্রশাসনের তদারকি, চলছে ইলিশ বেচা কেনার হাট, ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মা নদীর বিভিন্ন চরাঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রি করা হচ্ছে। আর সেখানে নিয়মিত বসছে ইলিশের হাট। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনের বেলায়ও জমজমাট হাট বসিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে মা ইলিশ। জেলার শিবচর উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের পুরানকান্দির চরে দিন রাত বসছে এ হাট।

এদিকে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন মা ইলিশ রক্ষার জন্য চরাঞ্চলে অভিযান চালালেও মাদবরেচর পুরান কান্দি এই রুটে নিয়মিত অভিযান না চালানোর কারণে নিয়মিত চলছে মাছ বিক্রি। নিরাপদে মাছ বিক্রির অন্যতম রুট হিসেবে দিনরাত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পদচারণয় মুখরিত এই চরাঞ্চল।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে শিবচর উপজেলার মাদরবেরচর ইউনিয়নের পুরানকান্দি চর অঞ্চলে গিয়ে দেখা যায় শত শত নৌকায় করে জেলেরা মা ইলিশ ধরছে আর তা নদীর পাড়ে হাট বসিয়ে বিক্রি করছে। বড় সাইজের (৪টি মাছ প্রায় ৫কেজি ওজনের) বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকায়।

দিনের বেলাতেও পুলিশ নিয়ে জেলেদের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। কারণ দূর থেকেই দেখা যায় প্রশাসনের লোক অভিযানে আসছে কিনা। তাই জেলেদের মধ্য কোনো ভয় কাজ করে না।

জেলে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যোগসাজশে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া দুর্গম চর হওয়ায় এ রুটে প্রশাসন অভিযান না করায় নিরাপদে বিক্রি হচ্ছে মাছ। তাই ইলিশ মাছ ক্রেতা- বিক্রেতা উভয়ে খুশি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানান, এখানে আমরা নির্ভয়ে দিনরাত উৎসবমুখর পরিবেশ মাছ বিক্রি করি। পাইকারি ছাড়াও এখানে খুচরা মাছ বিক্রি হয়। এখানে নগদ নগদ মা ইলিশ বিক্রিও করছি আবার বিভিন্ন স্থানে বরফ দিয়ে মজুদ রাখা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে এগুলো বাজারে বিক্রি করা হবে।

চর থেকে ফেরার পথে একই নৌকায় পার হওয়ার সময় মাছ কিনতে আসা রফিক আহম্মেদ নামের একজন ক্রেতা বলেন, এ চরে প্রশাসনের কোনো অভিযান চলে না বিধায় মা ইলিশের বিক্রি জমজমাট থাকে। সকাল ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এই হাট বসে। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি গিয়েও ফেরি করে ইলিশ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমি চার হাজার টাকার মাছ কিনেছি। এখানে প্রায় ১২ কেজি মাছ হবে।'

শিবচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সামসুজ্জামান জানান, আমরা পুলিশের সহযোগিতায় মা ইলিশ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যে আমরা বহু জেলেকে জরিমানা ও কারাদণ্ড দিয়েছি। তবে এত বিশাল নদী এলাকা দিন-রাত পাহারা দেওয়া খুবই কঠিন কাজ। জেলেদের মধ্যে সচেতনতা না এলে এ অভিযান সফল করা অসম্ভব বলেও জানান তিনি।