আখড়াবাড়িতে খুঁজে পাওয়া যায় মনের মানুষকে
ছেঁউড়িয়া আখড়াবাড়ি থেকে: মরমি সাধক ও বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর তিরোধান দিবস উপলক্ষে সাধন-ভজনের তীর্থস্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছে উৎসবের পল্লীতে। দেশ-বিদেশ থেকে আগমন ঘটছে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনের। তারা বলছেন আখড়াবাড়িতে আসলে খুঁজে পাওয়া যায় মনের মানুষকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গোষ্ঠগানের মধ্য দিয়ে বাউলদের সাধন ভজন শুরু হয়। গোষ্ঠগান শেষে বাল্যসেবা গ্রহণ করে বাউল অনুসারীরা। বাল্যসেবায় চিড়া, দই ও মিষ্টান্ন খাওয়ার চল বাউলদের। বাল্যসেবার পর ছোট ছোট মজমায় শুরু হয় গুরু শিষ্যের ভাব আদান প্রদান আর তত্ত্ব আলোচনা।
মেহেরপুর থেকে আসা বাউল ফকির আব্দুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, প্রাণের টানেই লালন মাজারে ছুটে আসি। সাঁইজির দর্শন ও তার নির্দেশিত পথ অনুসরণ করার চেষ্টা করি। এখানে আসলেই কেবল আত্মার শান্তি পাই।
ফরিদপুর থেকে আগত বাউল ফকির আব্দুল করিম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, মরমি সাধক ফকির লালন গানের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষে মানুষে যে ভালোবাসার কথা বলে গেছেন তার সেই পথ অনুসরণ করতেই এ মিলনমেলায় তিনি ছুটে এসেছেন।
লালন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, প্রথম দিন বুধবার বিকেলের মধ্যেই খেলাফতধারী সাধু-গুরুরা তাঁদের সেবাদাসী এবং লালনভক্ত-অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে সাঁইজির আখড়াবাড়িতে নিজ নিজ আসনে বসে তাঁদের কার্যক্রম শুরু করেছেন। লালন একাডেমি তিনদিন অনুষ্ঠান করলেও প্রকৃত বাউল-সাধুদের মূল অনুষ্ঠান দেড় দিনে শেষ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পুণ্যসেবা গ্রহণের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ সাধুসঙ্গ।
লালন মাজারের খাদেম মোহাম্মদ আলী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, দ্বিতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার দিনভর গুরু-শিষ্যের ভাব আদান-প্রদান, লালনতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা আর সেই সঙ্গে চলে নিজস্ব ঘরানায় লালনের গান। পরে দুপুরে পুণ্যসেবা নিয়ে যার যার গন্তব্যে রওনা হবেন বাউলরা।