নারী উদ্যোক্তা রুমার সাফল্য

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, গাইবান্ধা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

নারী উদ্যোক্তা রুমা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

নারী উদ্যোক্তা রুমা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। কৃষির ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠছে এদেশের অর্থনীতি। তবে দেশের কৃষির পাশাপাশি কিছু আয়বর্ধক খাতেরও ভূমিকা আছে অর্থনীতিতে। তবে এ কৃষি অর্থনীতি গড়ে ওঠার পেছনে রয়েছে নারীদের অবদান।

অথচ যুগ যুগ ধরে আমাদের সমাজে নারীরা নানা বঞ্চনার শিকার। এ সমাজে নারীদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা। তবে সকল সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নারীরা এখন মাথা উচুঁ করে দাঁড়াচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

এ দেশের নারীরা হিমালয় জয় করেছে, মহাকাশ অভিযানে যাচ্ছেন। এছাড়া নিজ মেধা ও পরিশ্রমে এদেশের নারীরাও হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তা। এমনি একজন নারী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মরিয়ম আক্তার রুমা। তিনি নিজের মেধা ও শ্রম কাজে লাগিয়ে একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেছেন দেশি ও বিদেশি গরুর খামার। খামার থেকে বার্ষিক আয় করছেন আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।

জানা গেছে, দেড় যুগ আগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ছোট সাতাইল বাতাইল গ্রামের নুরুল ইসলাম লিটনের সাথে বিয়ে হয় রুমার। বিয়ের পর রুমা মায়ের দেওয়া একটা বকনা বাছুর লালন পালন শুরু করেন। সেটি থেকে গরুর সংখ্যা চারটি হয়। ২০১৬ সালে রুমার স্বামী লিটন কুয়েত যান।

রুমা বলেন, ‘স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর আমার হাতে অবসর সময় বেড়ে যায়। তখনই বাড়ির চারটি গরু দিয়ে একটা খামার দেওয়ার পরিকল্পনা করি। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা পেয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে খামারে দেশি ৭ টি, শাহীয়াল ৫ টি, অস্ট্রেলিয়ান ৫ টিসহ মোট ১৭ টি গরু আছে। এরমধ্যে পাঁচটি গাভী ও বাকিগুলো ষাঁড় গরু।’

খামার থেকে কেমন আয় হয়- জানতে চাইলে রুমা জানান, প্রতিদিন গাভী থেকে ৪০-৫০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। ওই দুধ বিক্রি করেই খামারের খরচ চলে। আর বছরে যে গরু বিক্রি হয় সেটাই মূল আয়। গত কোরবানির ঈদে তিনটি গাভী ও তিনটি ষাঁড় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। এ আয় দিয়ে দুই কন্যা ও এক ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছেন রুমা।

গরুর খাবার ও পরিচর্যা সম্পর্কে রুমা জানান, তিনি গরুকে দানাদার খাবার দেন। সুষম খাদ্য সরবরাহের লক্ষে ঘাস চাষ করেন।

খামার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, ভবিষ্যতে খামারে ১০০ টি গরু তোলার ইচ্ছা আছে। যেখানে কয়েকজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তবে এ জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ঋণ সুবিধা পাওয়া গেলে উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।

গোবিন্দগঞ্জ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আমরা সব সময় রুমার খামারের খোঁজ খবর রাখি এবং গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ, রোগবালাই দমন ও খামার ব্যবস্থাপনায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’