কৃষকদের খাদ্য গুদামের বাইরে রেখে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাণিজ ফাতেমা। প্রতিবাদ করলে ধানের আদ্রতা, চিটাসহ বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় কৃষকদের।
তালিকায় নাম থাকার পরও অনেক কৃষক গুদামে ধান নিয়ে গেলে জানতে পারেন, তার নামে ধান আগেই গুদামে ক্রয় হয়েছে। ফলে তাদেরকে পুনরায় পরিবহন খরচ গুনে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে হয়রানি বন্ধে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের কাছে বিচার চানা ভুক্তভোগী কৃষকরা। চেয়ারম্যান গুদামে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি দেখে প্রতিবাদ করেন। গুদাম কর্মকর্তাকে কৃষকদের হয়রানি না করার নির্দেশনা দেন। এরপরও কোনো কাজ হয়নি। খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গুদাম বন্ধ করে অফিস ত্যাগ করেন।
কৃষকদের অভিযোগ, নিজের দোষ ঢাকতে কৌশলে গুদাম কর্মকর্তা কাণিজ ফাতেমা পুলিশ ডেকে কৃষকদের গুদাম চত্বর থেকে বের করে দেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লাঞ্চিতের অভিযোগ তুলে ধান চাল ক্রয় বন্ধ করে দেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন ধান নিয়ে আসা কৃষকরা।
একই স্টেশনে দীর্ঘ তিন বছর চাকরির সুবাধে গুদাম কর্মকর্তা কাণিজ ফাতেমা অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে ঘুষের রাজত্ব কায়েম করছেন বলেও অভিযোগ কৃষকদের।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মুরাদ বলেন, ‘বাড়ির ধান নিয়ে গুদামে তিনদিন ঘুরেছি। চতুর্থ দিনে এক হাজার টাকা নেওয়ার পর ধান নিয়েছেন। গুদাম কর্মকর্তা তার অফিসের দারোয়ান চঞ্চলের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন। চঞ্চল টাকা না পেলে গুদাম কর্মকর্তা ধান নেন না।’
কৃষকরা ফিরে গেলে রাতের আঁধারেও গুদামে ব্যবসায়ীর ধান ক্রয় হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কাণিজ ফাতেমা বলেন, ‘বিনা অনুমতিতে গুদামে প্রবেশ করে উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকেসহ আমার কর্মচারীকে লাঞ্চিত করেন। এ কারণে থানা পুলিশের সহায়তা নেওয়া হয়। এ ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত গুদামে ধান চাল ক্রয় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।’
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস বলেন, ‘টাকা ছাড়া সাধারণ কৃষকদের ধান ক্রয় না করে বিভিন্নভাবে হয়রারি করা হচ্ছে। গুদামে গিয়ে কৃষকদের ভোগান্তি দেখতে পেয়েছি। তাই কৃষকদের ভোগান্তি না করতে তাদের নির্দেশনা দিয়ে এসেছি।’