কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটে ১১ ফেরি, রাতে বন্ধ থাকে ৫টি

  • মো. রফিকুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, মাদারীপুর, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নদীর নৌরুট, ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নদীর নৌরুট, ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম নৌরুট মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া। প্রতিদিন এই নৌরুটে হাজারহাজার মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। এই নৌরুট পারাপারের জন্য রয়েছে ৮৭টি লঞ্চ, ২ শতাধিক স্পিডবোট ও ১৮টি ফেরি। তবে ইঞ্জিন বিকল থাকায় বর্তমানে ১১টি ফেরি নিয়মিত চলাচল করছে।

এদিকে, বর্ষা মৌসুমে পদ্মায় তীব্র স্রোত ও চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকট থাকায় রাতে ডাম্প ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। মূলত ডুবোচরে আটকে যাওয়ার ভয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে ৫টি ডাম্প ফেরি বন্ধ রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ী ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুম শুরু হবার পর থেকেই নৌরুটে ফেরি চলাচলে সংকট দেখা দেয়। তীব্র স্রোত থাকায় এ মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ রাখা হয়। পানি বৃদ্ধি পেলে তীব্র স্রোত এবং কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে মাঝ পদ্মায় প্রবেশের চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকট থাকায় ফেরিচলাচল বাধার মুখে পরে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকট থাকায় ফেরিগুলোকে সতর্কতার সাথে ধীরে ধীরে চ্যানেল অতিক্রম করতে হয়। তবে চ্যানেল পার হলেই মূল পদ্মায় তীব্র স্রোতের মুখে পরে অনেক ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। তখন রোরোসহ মাত্র কয়েকটি ফেরি চলাচল করতে পারতো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/02/1564741824417.jpeg

ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ডুবোচর থেকে রক্ষা পেতে কম লোড করে চলাচল করে ফেরিগুলো। এতে করে দৈনিক ট্রিপের সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া রাতে ৫টি ফেরি বন্ধ রাখা হয়। তখন মাত্র ৬টি ফেরি চলাচল করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ী-শিমুলিয়া রুটে চলাচলকারী ফেরির অধিকাংশই দীর্ঘদিনের পুরাতন। এর ফলেই প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে স্রোতের অজুহাত দেখিয়ে ফেরি চলাচল সীমিত করা হয়। দীর্ঘদিনের পুরাতন ফেরিগুলোর ইঞ্জিন স্রোত উপেক্ষা করে চলতে পারে না।

আরও জানা গেছে, কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া রুটের বেশির ভাগ ফেরি অতি পুরাতন ও মেয়াদোত্তীর্ণ। ফ্ল্যাট ফেরিগুলোর মধ্যে ১৯৩৮সালে থোবাল ও যমুনা, ১৯২৫ সালে রানীক্ষেত, রায়পুরা, রানীগঞ্জ ও টাপলো এক সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে কলকাতা পাট বহন করলেও পরে তা ফেরি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। অথচ এগুলোর মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। সেই ফেরিগুলো কাঁঠালবাড়ী রুটে চলাচল করছে। তবে চলাচলের উপযোগী ফেরিগুলোর মধ্যে রোরো ও কেটাইপ ফেরি ঠিকমত চলছে। বাকিগুলো বন্ধ থাকছে রাতের বেলা।

কাঁঠালবাড়ী ফেরি ঘাটের টার্মিনাল সুপারভাইজার মো. ফারুক হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-বে বলেন, 'বর্তমানে ১১টি ফেরি চলছে। ঈদ মৌসুমে যাত্রীদের সুবিধার্থে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হয়। তাছাড়া কিছু ফেরি মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে রয়েছে।’

বিআইডব্লিউটিসি'র মাওয়া জোনের ম্যানেজার (মেরিন) আহমদ আলী বলেন, 'বর্ষা মৌসুমে নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকে এবং চ্যানেল মুখে নাব্যতা সংকটও থাকে। এতে করে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এখনও তেমনই হচ্ছে। রাতে লৌহজংটার্নিং পয়েন্টের ডুবোচর এড়িয়ে ডাম্প ফেরিগুলোর চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় রাতে বন্ধ থাকে এসব ফেরি। গত বুধবার থেকে নাব্যতা সংকটের কারণে বিকল্প চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল করছে। সব মিলিয়ে বর্ষা মৌসুমে ফেরি চলাচল বেশ অস্বাভাবিক।'