কোদাল হাতে পানিতে এডিসি!

  • নিয়াজ আহমেদ সিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, লালমনিরহাট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম প্লাবিত এলাকায় পানি আটকানোর কাজ করছেন,  ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম প্লাবিত এলাকায় পানি আটকানোর কাজ করছেন, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

চারদিনের টানা বর্ষণের সঙ্গে উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চল থেকে শুরু করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে প্রায় ১০/১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় হাতীবান্ধার সিন্দুর্ণা ইউনিয়নের রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে যান লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম। সেখানে গিয়ে দেখতে পান এক যুবক একা কোদাল দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করছেন। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি সার্বিক) রফিকুল ইসলাম কোদাল হাতে নিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে পানি আটকানোর কাজে সহযোগিতা করেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, বিকেল ৪টার দিকে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি সার্বিক) রফিকুল ইসলাম প্লাবিত এলাকা দেখতে আসেন। পরিদর্শনে এসে তিনি দেখেন ওই এলাকার একটি ছেলে একা কোদাল হাতে নিয়ে রাস্তা উপচে যাওয়া পানি মাটি দিয়ে আটকানোর করছে। সেখানে কেউ এগিয়ে আসছে না। এমন দৃশ্য দেখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম নিজে কোদাল হাতে নিয়ে পানিতে নেমে পড়েন। পরে এলাকাবাসীরা এগিয়ে এসে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলামকে পানি আটকানোর কাজে সহযোগিতা করেন। রাত ৮টার দিকে লালমনিরহাট জেলা প্রসাশক আবু জাফর ওই স্থান পরির্দশন করেছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/12/1562886721133.jpg

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত চারদিনের ভারী বৃষ্টি। এতে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। নৌকা বা ভেলা ছাড়া চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধেঁয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। চারদিকে অথৈ পানির কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়ে অনেকটা বিপাকে চরাঞ্চলের খামারি ও চাষিরা। এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব।

জেলার ৫ উপজেলার প্রায় ১০/১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা। পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষগুলো বেশি কষ্ট পোহাচ্ছে।

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে এ ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, তিস্তায় সামান্য পানি বাড়লেই কিছু পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে তালিকা করে কিছু ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি প্রবাহ রাত ৯টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিয়ন্ত্রণ করতে ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।