‘স্যার ঘুমাচ্ছেন, এখন ডাকা যাবে না’

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টফোর.কম, লালমনিরহাট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সেবা গ্রহীতাদের সামনে রেখেই ঘুমাচ্ছেন হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী, ছবি: সংগ্রহীত

সেবা গ্রহীতাদের সামনে রেখেই ঘুমাচ্ছেন হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী, ছবি: সংগ্রহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলীর অফিসে যান স্থানীয় কয়েকজন সেবা প্রার্থী। কিন্তু অফিসে ঢুকেই দেখেন ওই কর্মকর্তা তার চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। এসময় পাশেই থাকা কম্পিউটারে একজন কাজ করছেন আর অপরজন অফিসের পিয়ন আবুল অন্যদিকে বসে আছেন।

তাকে ডাকার অনুরোধ করা হলে আবুল নামের সেই পিয়ন সাফ জানিয়ে দিয়ে বলেন যে, ‘স্যার ঘুমাচ্ছেন। এখন ডাকা যাবে না।’ ফলে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ওই অফিসে আসা সেবা প্রার্থীদের।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী তার চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন এমন ছবি একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলীর অফিসে যান স্থানীয় কয়েকজন। অফিসে ঢুকেই দেখেন ওই কর্মকর্তা তার চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন।

উপজেলার পাটিকাপাড়া এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা আব্দার রহমান টেবিলের সামনের চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ সময় গড়িয়ে গেলেও ঘুম ভাঙছিল না উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলীর। সেখানে বসে থাকা একজন মোবাইল ফোনে ঘুমিয়ে থাকা কর্মকর্তার ছবি তুলে নেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে আব্দার রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, তার মামা প্রয়াত মামা ইমরান হোসেনের পেনশনের বই হারিয়ে যায়। ফলে তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ভাগিনা আব্দারকে নিয়ে মঙ্গলবার হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। কিন্তু অফিসে ঢুকেই দেখেন যে, কর্মকর্তা শাহাজান আলী তার চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন।

হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘সেবা প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন ঘুমানোর বিষটি জানালে আমি নিজেই গিয়ে দেখি যে, উপজেলা হিসাব কর্মকর্তা তার অফিসের চেয়ারে বসে ঘুমাচ্ছেন। আর টেবিলের সামনে কয়েকজন সেবা প্রার্থী চেয়ারে বসে আছেন’।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শাহাজান আলী ঘুমানোর কথা অস্বীকার করে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, ‘আমার শরীর খারাপ, তাই একটু চোখ বন্ধ করে রেখেছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মতো কেউ উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে সেবা দিতে পারে না।’