দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে ছেলে সাদ্দাম হোসেনের (২২)। তাই একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি ছেলেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মা সামসুন্নাহার বেগম। কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচ প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা কোনোভাবেই জোগাড় করতে পারছে না হতদরিদ্র পরিবারটি। ফলে কিডনি দিয়ে বাঁচাতে চেয়েও টাকার অভাবে একমাত্র ছেলেকে হারাতে বসেছেন সামসুন্নাহার।
অসুস্থ সাদ্দাম হোসেন বর্তমানে ঢাকায় কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে মৃত্যু সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তার মা সামসুন্নাহার বেগমের আকুতি, ‘কিডনি আমি দেব, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের টাকা কে দেবেন? আমার একমাত্র ছেলেকে বাঁচান। অল্প বয়সে ছেলেকে হারাতে চাই না। চিকিৎসকরা বলেছেন, দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন না করলে সাদ্দামকে বাঁচানো সম্ভব না।’
জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম কাদমা গ্রামের মৃত আমের আলীর স্ত্রী সামসুন্নাহার বেগম। চার মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন সবার ছোট। পাঁচ বছর আগে বাবা মারা যাওয়া পর গোতামারী ডিএনএসসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েই ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি নেন সাদ্দাম হোসেন।
এদিকে অনেক কষ্টে দুই মেয়েকে বিয়ে দেন সামসুন্নাহার। দুই মাস আগে গার্মেন্টসের চাকরি করা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন সাদ্দাম। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, তার দুইটি কিডনি অকেজো। চিকিৎসা করতে সব বিক্রয় করে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারী ডিএনএসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেকেন্দার আলী বার্তা২৪.কম-কে জানান, সাদ্দামের বাবা মারা যাওয়ার পর পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে। সন্তানের দুইটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে জানার পর মা ভেঙে পড়েছেন। তাই অসহায় পরিবারটির দিকে চেয়ে ছেলের চিকিৎসার জন্য সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন জানান তিনি।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোবাইল ফোনে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের জমি যা ছিল সব বিক্রি করে চিকিৎসা করতে শেষ হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা চলে গেছে আরও পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান মহির উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি, সাদ্দামকে তার মা কিডনি দেবেন। কিন্তু পরিবারটির অচল অবস্থা কিডনি প্রতিস্থাপনে খরচ জোগাতে পারছে না। তাই সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।’
অসুস্থ গার্মেন্টসকর্মী সাদ্দাম হোসেনকে সহযোগিতার করতে যোগাযোগ করা যাবে সাদ্দাম হোসেন- ০১৭৬১-০৪৭৫২৩ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক সেকেন্দার আলী- ০১৭১৪-৫২৪১০৪ নম্বরে। সাহায্য পাঠানো যাবে রকেট- ০১৭৭৪১৬৩০৩১৪ ও বিকাশ- ০১৭৩২-২৬০৩১০।