লালমনিরহাটে পৌর শহরের বিভিন্নস্থানে ডাস্টবিন না থাকা ও সংশ্লিষ্টদের অব্যবস্থাপনায় যত্রতত্র ময়লা ফেলা হচ্ছে। ফলে আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। শনিবার (৮ জুন) দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, পৌরসভা হলেও জনবল কাঠামোসহ নানা সংকটে শহরের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শহরের ময়লা অপসারণের জন্য পৌরসভার পানি ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের পাশে একটি গর্ত ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় দুর্গন্ধে বাতাস দূষিত হচ্ছে। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে জমে থাকা ময়লা যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দুর্গন্ধে আবাসিক এলাকার মানুষ, শিক্ষার্থী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস-আদালতগামী মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
পৌরসভার তথ্য মতে, সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটকে ১৯৭২ সালে পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। এর পূর্বপাশে কুলাঘাট ইউনিয়ন, উত্তরে মোগলহাট ইউনিয়ন, দক্ষিণে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে সাপটিবাড়ি ইউনিয়ন অবস্থিত। এতে মোট ৯টি ওয়ার্ড আছে। পৌরসভার মোট আয়তন ১৭ দশমিক ৪০ বর্গকিলোমিটার। ২০০৫ সালে এটি দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ৬২ হাজার ৪৬৭ জন।
পৌরসভার বাসিন্দাদের দাবি, ময়লা ফেলার ডাম্পিং গ্রাউন্ড (ময়লা ফেলার ভাগাড়) থাকলেও তা ব্যবহারে অব্যবস্থাপনা রয়েছে। ফলে যত্রতত্র ময়লা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আর পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীদের দাবি, তারা নির্দিষ্ট সময়েই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, শহরের মূল স্থানগুলোতে অস্থায়ীভাবে ময়লার স্তূপ পড়ে আছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা মাঝে মধ্যে আবর্জনা ফেলতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গেলেও অধিকাংশ স্থানের ময়লা দিনের পর দিন পড়ে থাকছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে এসব ময়লার স্তূপ যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে মশা-মাছির আবাসস্থল। অপরদিকে শহরের আলোরূপা সিনেমা হলের পেছনের পুকুর ময়লার স্তূপ করে রাখার কারণে পুরো এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। দুর্গন্ধের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী, পথচারীরা ও শিক্ষার্থীরাও। এসব ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলার কারণে গন্ধ আরও তীব্রভাবে ছড়িয়ে পড়ছে শহরজুড়ে।
মহিলা কলেজ মোড়ের ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আবর্জনার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। হোটেল ও রেস্তোরাঁয় চা-নাশতা খাওয়ার পরিবেশও নেই। রাস্তা-ঘাটে যত্রতত্র ময়লা ও আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’
লালমনিরহাট পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘পুরো শহরের জন্য ঝাড়ুদার ৯৪ জন, ড্রেন ক্লিনার ২৪ জন ও আবর্জনা ফেলার লেবার রয়েছে ২১ জন। এছাড়া আবর্জনাবাহী ট্রলি ৬টি ও ট্রাক রয়েছে ৩টি। যদিও অধিকাংশ গাড়ি নষ্ট। ফলে যানবাহন সংকটে শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের গাফিলতি আছে। তবে আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’