৪৭ বছরেও কেউ কথা রাখেনি

  • তোফায়েল হোসেন জাকির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গাইবান্ধা, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধার সদর উপজেলার কুপতলা ও সাদুল্লাপুরের বনগ্রামের মাঝে ঘাঘট নদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে পারাপারের ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

গাইবান্ধার সদর উপজেলার কুপতলা ও সাদুল্লাপুরের বনগ্রামের মাঝে ঘাঘট নদীতে স্বেচ্ছাশ্রমে পারাপারের ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয়রা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

সরকার আসে, সরকার যায়। ভোট আসলে নেতাকর্মীদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়, নানা প্রতিশ্রুতি দেন নেতারা। নির্বাচিত হলে আর দেখা মেলে না তাদের। এভাবে চলে গেছে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৪৭ বছর, নির্মাণ হয়নি গাইবান্ধার ঘাঘট সেতু।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ও সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের মাঝে এই ঘাঘট নদী। সাদুল্লাপুর উপজেলা শহর থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে শালাইপুর ও টুনিচরসহ কয়েকটি গ্রাম। এই  গ্রামগুলোর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ঘাঘট নদী।

বিজ্ঞাপন

এলাকার শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের বর্ষা মৌসুমে নদীর ওপারে সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে যাওয়ার একমাত্র পথ ডোঙ্গা নৌকা ও বাঁশের সাঁকো। শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে গেলে স্বেচ্ছাশ্রমে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয় বাঁশের সাঁকো।

টুনিরচর গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম ও রাজা মিয়া বলেন, ‘নতুন সরকার আসে কিন্তু টুনিরচরের মানুষের দুর্ভোগ শেষ হয় না। নির্বাচনের সময় এমপি ও চেয়ারম্যান সাহেবরা নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি।’

কুপতলা গ্রামের বাসিন্দা আজাদুল ইসলাম ও নুর আলম মিয়া বলেন, ‘যোগাযোগের পথ না থাকায় এলাকার উৎপাদিত কাঁচামাল ও খাদ্যশস্য সঠিক সময়ে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয় করা সম্ভব হয় না। ফসল বিক্রি করতে পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর, দাড়িয়াপুর ও গাইবান্ধা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতে হয় ২০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে।’

একই গ্রামের সাদেক আলী বলেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। তারা নৌকা ও সাঁকো দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে ভয় পায়।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত এলাকাটি। টুনিরচর গ্রামের ঘাঘট নদীর ওপর সেতু নির্মিত হলে মানুষের যেমন উন্নয়ন ঘটবে, তেমনি উপজেলা শহরের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কুপতলা, দুর্গাপুর, মালিবাড়ি, চাপাদহ ও দাড়িয়াপুরসহ কয়েক গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ও বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন সরকার ঐ এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে।