বিদেশ ছেড়ে মাশরুম চাষে যুবক

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ডট কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বার্তা ২৪.কম

বার্তা ২৪.কম

বিদেশে বিলাসী জীবন কাটছিল ইমাম হোসেনের। তিনি আবুধাবীতে একটি বেসরকারী ফার্মে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি দেশে এসে মাশরুম চাষে সময় পার করছেন। ইমাম হোসেন শিবগঞ্জ পৌর এলাকার চতুরপুর গ্রামের বাসিন্দা ২০০৭ সালে আবুধাবী যান। সেখানেই তিনি প্রথম মাশরুম খান। প্রথম খাবার পরেই তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে মাশরুম নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এর পর ইউটিউব দেখে তিনি মাসরুম চাষ,বীজ উৎপাদন,বাজার এবং রক্ষণাবেক্ষণের ধারণা নেন।

মাশরুমের আচার হাতে ইমাম হোসেন

এর পর ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশে আসেন। দেশে এসে প্রথমেই যোগাযোগ করেন ঢাকার একটি মাশরুম ফার্মেও সঙ্গে যোগাযোগ করে বীজ সংগ্রহ করেন। সে বীজ থেকে ঘরোয়াভাবে তিনি মাশরুম উৎপাদন করেন। তার প্রথম উৎপাদিত মাশরুম নিজ এলাকার হোটেল এবং কিছু পরিচিত মানুষের কাছে বিক্রি করেন। প্রথম উৎপাদিত মাশরুম থেকেই অধিক মুনাফা হয় তার।

ইমাম হোসেন আরও জানান, প্রথম উৎপাদিত মাশরুম হতে সাফল্য পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন।যোগাযোগ করেন সাভার মাশরুম ইন্সটিটিউট সেন্টারে। সেখানে হাতে কলমে তিনদিন প্রশিক্ষন গ্রহন করে মাশরুমের মাদার বীজ সংগ্রহ করেন। সে বীজ দেখেই এবার তিনি নিজেই মাদার এবং স্পন্ট বীজ তৈরি করেন। তিনি বলেন,মাশরুম উৎপাদনের জন্য ২৮/৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপ মাত্রা প্রয়োজন। যদি তাপ মাত্রা ঠিক থাকে তবে মাশরুমের অধিক উৎপাদন হবে।

বিজ্ঞাপন

তার মতে,২৫০ গ্রাম মাশরুম বীজ উৎপাদনে ১৬ কেজি কাঠের গুড়া,৮কেজি গমের ভূসি,চার কেজি ধানের তুস,১০০ গ্রাম চুন এবং পরিমান মত পানি প্রয়োজন হয়। এই বীজ তৈরি করতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগে।বর্তমানে তার জমিতে যে পরিমান মাশরুম চাষ হচ্ছে তা দিয়ে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও সরবরাহ করা সম্ভব।

শুকনা মাশরুম

তিনি আরও বলেন,তাজা মাশরুম তিন দিনের মধ্যে খেতে হয়। এছাড়া যদি শুকনা করে রাখা হয় তবে, এক বছর রাখা সম্ভব। এছাড়াও গুড়া মাশরুম দীর্ঘদিন রাখাও যায়।

ইমাম হোসেন শুধু মাশরুম চাষে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। তিনি জানান,মাসরুম এমন একটি খাদ্য যা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। যার উদাহরণ হিসেবে তিনি নিজ বাড়ীতে আচার উৎপাদন শুরু করেছেন মাশরুম দিয়ে। এর মধ্যে বরই আচার,তেঁতুল,চালতা,কামরাঙার সাথে মাশরুম আচার তৈরি করে বিক্রি করছেন। তার তৈরি আচারও দেশের বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করছেন। ফলে মাশরুম হতে যেমন আয় হচ্ছে তার চেয়ে বেশি আয় হয় আচার দিয়ে।

তিনি জানান,দেশে এসে প্রথম যখন মাশরুম চাষে আগ্রহ হয়ে কাজ শুরু করলেন, তখন নিজ পরিবার থেকে শুরু গ্রামের লোকজনও অনেকে বাঁকা চোখে দেখতো। কিন্তু এখন অনেকে পরামর্শ নিচ্ছে এবং সাহস দিচ্ছে।

নিজ দেশে সৎ পথে পরিশ্রম করে জীবন চালানোর মত আনন্দ আর নেই। তিনি দেশে একজন ভাল উদ্যোক্তা হতে চান।