জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: রোহিঙ্গা ইস্যুতে সর্বদলীয় কমিটি গঠনে আহ্বান জানিয়েছে ১৪ দলীয় নেতারা। বুধবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম অধিবেশনে জরুরি জনগুরুত্ব সম্পন্ন বক্তব্যে তারা এ আহ্বান জানান ১৪ দলের নেতারা।
বুধবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রথম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যে তারা এ আহ্বান জানান।
১৪ দলীয় মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম হয়েছে, সারা বিশ্বের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে মনে করছেন। মিয়ানমারের পর এখন সৌদি আরব থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসছেন। ইউরোপে একজন শরনার্থী নিতে ধনী দেশগুলো ভীতসন্ত্রস্ত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিল। এখন বাংলাদেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। কিন্তু আর কতদিন এই বোঝা আমরা বহন করব।
তিনি বলেন, সারাবিশ্বের অনেকেই আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু সমাধান হয়নি। যেহেতু সংসদ চলছে, রাষ্ট্রপতির ভাষণের পরে একটি দিন নির্ধারণ করুন, যেখানে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আমাদের করণীয় কি, সেটি নিয়ে আমাদের আলোচনা করা দরকার। এ পর্যন্ত মাত্র তিনজন ফিরে গেছে। প্রয়োজনে সংসদীয় কমিটি করে সব দল থেকে প্রতিনিধি নিয়ে ভারত, চীন এবং মিয়ানমারে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে পারে না।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমি রোহিঙ্গাদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও কথা বলেছেন। যারা আজকে সংসদে বসে আছেন বিশ্ববাসীর কাছে বলা দরকার রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিয়ে আমরা কিভাবে দেখছি। সেই জন্য আমি মনে করি নাসিম সাহেবের যে প্রস্তাব- একটা দিন ধার্য করুন।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য তথা জনপ্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিষয়ে কী দৃষ্টিভঙ্গি, তা দেশবাসীকে বলা উচিত এবং বিশ্ববাসীকে জানানো উচিত। নতুন সরকার নতুন সংসদ কি মনে করছে সেটা বিশ্ববাসীর জানা উচিত। একই সঙ্গে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংসদের সর্বদলীয় কমিটি করে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সরকারের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট দেশে ও জাতিসংঘ সফর করে সরেজমিন প্রতিবেদন তৈরি করে সংসদে পেশ করা হোক।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, একাদশ সংসদ কি মনে করে সেটি উপস্থাপন করা প্রয়োজন মনে করি। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছিলাম, সেটি কতটুকু যথাযথ হয়েছিল সেটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি। চুক্তিতে স্বেচ্ছায় ফিরে গেলেই তারা ফিরে যাবেন, সেখানে স্বেচ্ছায় শব্দটি যখন যুক্ত করা হয়েছে, সেটি বাংলাদেশের পক্ষে গেছে বলে আমি মনে করতে পারি না।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যে বন্ধুরা যারা মনে করেছিলেন এই পরামর্শ দিয়ে সমস্যার সমাধান করবেন, তারা তাদের রাজনীতি করেছেন। আমাদের রাজনীতি করেননি। এই সমস্যা চলতে পারে না। আমি মো: নাসিমের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করছি।