ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফার সংঘর্ষে ছাত্রদলের ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সোনাগাজী জিরো পয়েন্টের তাকিয়া রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী লাঠিপেটা করে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে নিশ্চিত করেছেন সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান।
পুলিশ ও ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সোনাগাজী সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা মিরাজ ও রায়হানকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তাদের পরিবার থানায় মামলা করলে ওই মামলায় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস ও তার কয়েকজন অনুসারীকে আসামি করা হয়।
মামলার প্রতিবাদে বিকালে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুরের নেতৃত্বে সোনাগাজী পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদলের একাংশ। মিছিলটি বাজারের পশ্চিমে পৌঁছালে আরেকটি পক্ষ তাতে হামলা চালায়। এতে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুর বলেন, দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হওয়ায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রদল। মিছিলটি বাজারের পশ্চিম অংশে পৌঁছালে ছাত্রদল-যুবদলের অনুপ্রবেশকারীরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা মিরাজ ও রায়হানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রদল নেতাদের ওপর হামলা করেছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- সোনাগাজী পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক রিংকু, ছাত্রদল নেতা আসিফুল ইসলাম, কামরুল হাসান, আব্দুল্লাহ আল নোমান, ইব্রাহিম, আবুল কালাম, নুর করিম, রাহাতুল ইসলাম, আবু ইউসুফ, আবুল কাসেম, নূর নবী, এনায়েত হোসেন, ওমর হাছান, রহমত উল্লাহ শাহীন, রফিক, জসিম উদ্দিন, জিহাদ রুবেল, সম্রাট, মতিউর রহমান মাসুম, মারুফ, সাজ্জাদ, সালাউদ্দিন, সজিব, শাহরিয়ার ইসলাম, সজিব হোসেন, পারভেজ, বাবর, মাসুদ, জিসান, রামিম, সবুজসহ অন্তত ৩৫ জন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম মিলন বার্তা২৪.কমকে জানান, ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়েছি। এ ঘটনায় তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘটনার বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করেছে। এ ঘটনায় ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে তবে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি বলে জানান তিনি।
ময়মনসিংহে জেলা তাঁতি লীগের আহ্বায়ক মো. তাইজুল ইসলাম জুয়েলকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নগরীর মাসকান্দা পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়। তাইজুল ইসলাম সদর উপজেলার চরপাড়া এলাকার মো. সেকান্দর আলীর ছেলে।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে তাইজুল ইসলাম জুয়েল নগরীর মাসকান্দা এলাকার পাসপোর্ট অফিসের সামনে অবস্থান করছেন। এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, কোন মামলায় তাইজুল ইসলাম জুয়েলকে আদালতে পাঠানো হবে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি এখনো পুলিশ হেফাজতে আছেন। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। শত শত নারীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। শেখ হাসিনার মাথা পালিয়ে গেলেও বডি রয়েছে এই দেশে। তার সেই সব সাঙ্গপাঙ্গরা দেশে এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সদরের চৌরাস্তা পুরান বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় কৃষকদলের আয়োজনে শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মাশুকুর রহমান বলেন, আমাদের দলে একটা বেইমান ছিলেন। যার নাম শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। এই লোভী উচ্ছিষ্টভোগী নেতা বিএনপির সাথে বেইমানি করে রাতের আঁধারে কিং পার্টি খুলে শেখ হাসিনার সাথে হাত মিলিয়ে ২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেন। ফরিদপুর-১ আসনে তিনি বিএনপি নেতা কর্মীদের ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই বেইমান নেতার ফাঁদে কোন বিএনপি নেতাকর্মী পা দিবেন না।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে এমপি নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা বিচার করেছে সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে। ওই একই ট্রাইব্যুনালে এখন সত্য-সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করা হবে। যা পৃথিবীর সবাই জানবে। আশা করি, শেখ হাসিনার ফাঁসি হবে। কারণ দেশের শিশুরাও এই খুনি হাসিনার ফাঁসি চায়।
বোয়ালমারী উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক এফএম কাইয়ুম জঙ্গি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিরাজুল ইসলাম মিরাজ, বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপি নেতা এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, আতাউর খান, মো. ইকরাম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সঞ্জয় সাহা প্রমুখ।
এছাড় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের ৮৬ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ওই মামলায় গ্রেফতার চার নেতাকর্মীকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার রাতে হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন দুলাল বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাশার সবুজ (৫৫), উপজেলার ছয়আনী গালা গ্রামের হারুন অর রশিদ (৫৮), কালই গ্রামের নিত্য সরকার (৪৫) ও মতিয়ার রহমান মতি (৬৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুনার রশীদ খান মুন্নুর কন্যা জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বয়ড়া গ্রামের বাস ভবনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাকর্মীদের আলোচনা সভায় বক্তব্য চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হামলা চালায়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ করা হয়।
দেশিয় অস্ত্র, লোহার লড, বাটাম, হকিস্টিক, চাপাতি ও লাঠি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলাসহ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বাড়ি ঘর ভাঙচুর করা হয়। মামলায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অজ্ঞাত আরও ৪০/৫০ জনের জড়িত থাকার বিষয়েও উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মুমিন খান জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার বয়ড়া গ্রামের বাস ভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বুধবার ভোরে নিজ নিজ বাড়ি থেকে চারজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি মুমিন খান।