স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে আমানুল্লাহ কবির

  • মুশতাক হোসেন
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে আমানুল্লাহ কবির, ছবি: সংগৃহীত

স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রামে আমানুল্লাহ কবির, ছবি: সংগৃহীত

আমানুল্লাহ কবির ভাইয়ের লেখা সংবাদপত্র রিপোর্ট ও কলাম লেখার সাথে আগে পরিচয় থাকলেও সরাসরি পরিচয় হয় ১৯৮২-৯০ সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে। আমরা তখন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় সামরিক শাসক এরশাদের অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে। ১৯৮২-৮৩ সময় সূচনালগ্নে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তুমুল বিক্ষোভ গড়ে তোলে। রাজনৈতিক দলগুলো যখন আন্দোলনে এগিয়ে আসে, তখন তার সাথে হাত ধরাধরি করে রাজনৈতিক সমস্যাগুলোও সামনে চলে আসে।

আমরা ছাত্র নেতারা তখন আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখার জন্য পেশাজীবী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের দ্বারস্থ হতাম। আইনজীবী নেতৃবৃন্দ অনেক সমস্যা সমাধান করেছেন। এরপরেই আসে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের কথা।

বিজ্ঞাপন

তখন সাংবাদিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ ছিল। তাদের মুরুব্বি ছিলেন ফয়েজ ভাই। তবে ফয়েজ ভাই কখনো একা সিদ্ধান্ত দিতেন না। তিনি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের মুখ থেকেই সিদ্ধান্ত বের করে আনতেন। আমার মনে পড়ে ফয়েজ ভাই যে কয়েকজনকে সবার শেষে মতামত দিতে বলতেন, তার মধ্যে আমানুল্লাহ কবির ভাই ছিলেন। তিনি ধীর-স্থির শান্ত কন্ঠে যখন মতামত জানাতেন তখন বুঝে নিতাম এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে।

১৯৮৬ সালে এরশাদের সামরিক শাসন বহাল রেখে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ফাটল সৃষ্টি হয়। তখন পেশাজীবিদের ঐক্য সৃষ্টি করে আন্দোলন বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। আমানুল্লাহ কবির ভাই ছিলেন আন্দোলন বাঁচিয়ে রাখার সৈনিকদের একজন।

সাংবাদিকদের মাঝে তো বটেই, রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র নেতাদের প্রেস ক্লাবে ডেকে এনে আন্দোলনকে আবার গড়ে তোলার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন কবির ভাই। আর পত্রিকাতে অবিরাম লেখা তো ছিলই।

সাম্প্রতিক কালে তার সাথে দেখা হত বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে টক-শো অনুষ্ঠানে। দেশে গণতন্ত্রের নানা চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথাবার্তা হত। আগের মতই তিনি আশাবাদী ছিলেন।

আশাবাদী আমানুল্লাহ কবির ভাইয়ের মৃত্যু নেই।

মুশতাক হোসেন: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ডাকসু