আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে ‘দুই বাংলার রকবাজি’

  • বিনোদন ডেস্ক
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৮ অক্টোবর না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আইয়ু্ব বাচ্চু। প্রয়াত এই গায়কের স্মরণে কলকাতায় কনসার্টের আয়োজন করেছে ‘কাফে কবিরা’। ২৪ নভেম্বর কলকাতার পাটুলি মাঠে আয়োজিত হবে এই কনসার্ট।

দুই বাংলার শিল্পীরা এই কনসার্টে আসবেন বলে জানা গিয়েছে। ‘শহর’, ‘ভূমি’, ‘চন্দ্রবিন্দু’, ‘লক্ষ্মীছাড়া’, ‘মহিনের ঘোড়াগুলি’, ‘ক্যাকটাস’ ব্যান্ড থেকে শিল্পীরা উপস্থিত থাকবেন।

বিজ্ঞাপন

শোনা যাচ্ছে, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র, অভিজিৎ, উপল, শিলাজিৎ, গৌরব, প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় (বুলা), বাপি, দেব চৌধুরি, সিধুর মতো জনপ্রিয় শিল্পীরা পারফর্ম করতে পারেন এই কনসার্টে। থাকবেন বাংলাদেশের বিখ্যাত মাকসুদ হক (মকসুদ ও ঢাকা), সিনা হাসান (বাংলা ফাইভ), জর্জ লিঙ্কন ডি কোস্টা (আর্টসেল) ও মেহরান।

আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম গিটার শিক্ষক জেকাব ডায়াস, সুব্রত বড়ুয়া রনি ও ইমরান হোসেনও থাকবেন কনসার্টে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত। ঢাকার মগবাজারে তার নিজের স্টুডিও এবি কিচেন আছে। সেখানেই গান তৈরি ও কনসার্টের আগে অনুশীলন করতেন তিনি।

১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সঙ্গীতজগতে তার পথচলা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি।

১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম। এলআরবির অন্য অ্যালবামগুলো হলো ‘সুখ’ (১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘ফেরারী মন’ (১৯৯৬), ‘স্বপ্ন’ (১৯৯৬), ‘যুদ্ধ’ (২০১১), ‘স্পর্শ’ (২০১৩)।

১৯৮৬ সালে প্রকাশিত ‘রক্তগোলাপ’ হলো তার প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম। তার সাফল্যের শুরুটা হয় দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ময়না’র (১৯৮৮) মাধ্যমে। ১৯৯৫ সালে বাজারে আসে তার তৃতীয় একক অ্যালবাম ‘কষ্ট’। এর প্রায় সব গানই জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে ‘কষ্ট কাকে বলে’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘অবাক হৃদয়’, ‘আমিও মানুষ’ গানগুলো। তার অন্য একক অ্যালবামগুলো হলো ‘সময়’ (১৯৯৮), ‘একা’ (১৯৯৯), ‘প্রেম তুমি কি’ (২০০২), ‘দুটি মন’ (২০০২), ‘কাফেলা’ (২০০২), ‘রিমঝিম বৃষ্টি’ (২০০৮), ‘বলিনি কখনো’ (২০০৯), ‘জীবনের গল্প’ (২০১৫)।

আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘চলো বদলে যাই’। এর কথা ও সুর তারই। শ্রোতাপ্রিয় গানের তালিকায় আরও রয়েছে ‘শেষ চিঠি কেমন এমন চিঠি’, ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘হকার’, ‘সুখ’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘রূপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’, ‘তারা ভরা রাতে’, ‘এখন অনেক রাত’ ইত্যাদি।

রক ঘরানার গানের এই শিল্পী আধুনিক আর লোকগীতিতেও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন আইয়ুব বাচ্চু। বেশকিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রে তার গাওয়া প্রথম গান ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’। এছাড়া বড় পর্দার জন্য তিনি গেয়েছেন ‘আম্মাজান’, ‘ভুলে গেছি জুতোটার ফিতেটাও বাঁধতে’ (চোরাবালি), ‘আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে’ (সাগরিকা), ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি প্রেম আমার উপরে পড়েছে’ (ব্যাচেলর)।